ফ্রয়েডীয় মনস্তত্ত্ব লক্ষণ সম্পন্ন গ্রন্থ ও লেখক
¤ উপন্যাস :-
১) "চোখের বালি" (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) --- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
★প্রকাশনা :- "মজুমদার লাইব্রেরি", কলকাতা।
★তথ্য :- সমালোচকদের মতে, এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃত। ঔপন্যাসিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "চোখের বালি" (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাসটিই একমাত্র তাঁর ফ্রয়েডীয় লক্ষণ সম্পন্ন উপন্যাস।
★পূর্বনাম :- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ''চোখের বালি'' (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাসটির পূর্বনাম ছিল :- ''বিনোদিনী''।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ''চোখের বালি'' উপন্যাসটি বৈশাখ, ১৩০৮ বঙ্গাব্দ-কার্তিক, ১৩০৯ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত কলকাতা থেকে কবিগুরু শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১/১২৬৮-১৯৪১/১৩৪৮) সম্পাদিত মাসিক নবপর্যায়ের ''বঙ্গদর্শন'' [প্রথম প্রকাশ : ১৮৭২/১লা বৈশাখ, ১২৭৯ বঙ্গাব্দ এবং প্রথম সম্পাদক : সাহিত্যসম্রাট
শ্রীবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়] পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
★গ্রন্থাকারে প্রকাশ :- ঔপন্যাসিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "চোখের বালি" উপন্যাসটি ১৩০৯ বঙ্গাব্দে (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দ) গ্রন্থাকারে (বই আকারে) প্রকাশিত হয়।
★নতুন সংস্করণ প্রকাশনা ও প্রকাশকাল :- "ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস", কলিকাতা। ২০ই জুন, ১৯১০ খ্রিস্টাব্দ।
★উপন্যাসের ধরন :- এটি একটি সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস।
★মূল উপজীব্য বিষয় :- "সমাজ ও যুগযুগান্তরাগত সংস্কারের সঙ্গে ব্যক্তিজীবনের বিরোধ"।
★উল্লেখযোগ্য চরিত্র :- 'মহেন্দ্র', 'আশা', 'বিহারীলাল', 'বিনোদিনী', 'রাজলক্ষ্মী', 'অন্নপূর্ণা' প্রমুখ।
★ক্রাউন :- ৮ পেজি ৩৩৮ পৃষ্ঠায় বইটি মুদ্রিত হয়। ★মুদ্রণ সংখ্যা :- ১০০০টি।
★উপন্যাস (বই)-টির মূল্য :- ২ টাকা চার আনা।
★উপন্যাসের নাট্যরূপ :- ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে নাট্যকার শ্রীঅমরেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৭৬–১৯১৬) এই উপন্যাসটির নাট্যরূপ দেন।
[®রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ''চোখের বালি'' (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাসটির নাট্যরূপ নিয়ে সমালোচনা :- ২৬শে নভেম্বর, ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা জেলার বিডন স্ট্রিটে অবস্থিত ক্লাসিক থিয়েটারে ''চোখের বালি'' (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাসটি নাট্যাকারে প্রথম মঞ্চস্থ হয়। উপন্যাসটির নাট্যরূপ কে দিয়েছিলেন, তা নিয়ে দুই রকম মত শোনা যায়। সাহিত্য-সমালোচক প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর 'রবীন্দ্রজীবনী'
(২য় খণ্ড) গ্রন্থে বলেছেন, --- "নাট্যরূপ দিয়েছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ।" যদিও কবি-প্রাবন্ধিক সুধীন্দ্রনাথ দত্তের ভাই সাহিত্য-সমালোচক হরীন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর "রবীন্দ্রনাথ ও সাধারণ রঙ্গালয়" গ্রন্থে লিখেছেন, ".... গিরিশচন্দ্রের
কাছে নাট্যরূপ দেবার প্রস্তাব করা মাত্র তিনি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন, বলেন-কী! ঐ দূর্নীতিমূলক বই-এর আমি নাট্যরূপ দেব? আমি যে থিয়েটারে আছি, সে থিয়েটারে আমি কখনও অমন জঘন্য বই অভিনীত হতে দেব না। অমরেন্দ্রনাথ (দত্ত) ভীষণ একরোখা মানুষ ছিলেন, তাই নিজেই নাট্যরূপ দিয়ে 'চোখের বালি' মঞ্চস্থ করার সিদ্ধান্ত নিলেন।" সমসাময়িক সংবাদপত্র প্রতিবেদনেও কবি-প্রাবন্ধিক সুধীন্দ্রনাথ দত্তের ভাই সাহিত্য-সমালোচক হরীন্দ্রনাথ দত্তের বক্তব্যের সমর্থন পাওয়া যায়। ক্লাসিক থিয়েটার মঞ্চে ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে তিনবার ও ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে দুইবার ''চোখের বালি'' (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাসটি মঞ্চস্থ হয়। নাট্যকার, অভিনেতা ও থিয়েটার পরিচালক অমরেন্দ্রনাথ দত্ত নিজে এই নাটকে নায়ক 'মহেন্দ্র'-এর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।]
★সর্বমোট অনুবাদ :- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "চোখের বালি" উপন্যাসটি ইংরেজি দুইবার, হিন্দি ও জার্মান-সহ সর্বমোট তিনটি ভাষায় সর্বমোট চারবার অনূদিত হয়।
★ইংরেজি অনুবাদ :- তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুইটি ইংরেজি অনুবাদ নিম্নে দেওয়া হল ---
★"চোখের বালি" (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাসের প্রথম কিছু অংশ অনুবাদ :-
ক) কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক জে. ডি. আন্ডারসন (১৮৫২-১৯২৪) তাঁর "চোখের বালি : রবীন্দ্রনাথ টেগোর অ্যাজ আ নভেলিস্ট" ["Chokher Bali : Rabindranath Tagore as a
novelist"] প্রবন্ধগ্রন্থে (গদ্যগ্রন্থ) এই উপন্যাসের কিছু অংশ অনুবাদ করেন। প্রবন্ধগ্রন্থ (গদ্যগ্রন্থ)-টি ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ই মে "এশিয়াটিক কোয়াটার্লি" ["Asiatic
Quarterly"] পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সেই বছরই জে. ডি. আন্ডারসন "চোখের বালি" ইংরেজি অনুবাদের জন্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে অনুমতি চান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনুমতি দিলেও শেষ পর্যন্ত তিনি উপন্যাসটি অনুবাদ করে উঠতে পারেন নি।
★"চোখের বালি" (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাসের প্রথম সম্পূর্ণ অংশ (সম্পূর্ণ বই বা গ্রন্থ) অনুবাদ :-
খ) ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে "দ্য মডার্ন রিভিউ" ("The Modern Review") পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের উৎসাহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাইপো অনুবাদক সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর "চোখের বালি" উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ করেন। এই ইংরেজি অনুবাদটি "আইসোর"
("Eyesore") নামে উক্ত পত্রিকার ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের
জানুয়ারি সংখ্যা থেকে ডিসেম্বর সংখ্যা পর্যন্ত কিস্তিতে কিস্তিতে প্রকাশিত হয়। পরে গ্রন্থাকারে বই আকারে প্রকাশের সময় অনুবাদটির নাম দেওয়া হয় :- "বিনোদিনী" ("Binodini")।
★চলচ্চিত্র নির্মাণ :-
ক) ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে "অ্যাসোসিয়েট পিকচার্স"-এর প্রযোজনায় ঔপন্যাসিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "চোখের বালি" (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাস অবলম্বনে বাংলা ভাষায় নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়।
খ) এছাড়া ২০০৩ সালে একজন বাঙালি তথা ভারতীয় বিখ্যাত পরিচালক (চলচ্চিত্রকার) ঋতুপর্ণ ঘোষ (১৯৬৩-২০১৩) ঔপন্যাসিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "চোখের বালি" (৫ই এপ্রিল, ১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাস অবলম্বনে "চোখের বালি"-এই একই নামে বাংলা ভাষায় নির্মিত একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন।
২) "মহিষী" (১৯২৯) --- জগদীশ গুপ্ত।
★প্রকাশনা :- "শরচ্চন্দ্র চক্রবর্তী অ্যান্ড সন্স", ২১ নবকুমার চৌধুরী লেন, কলকাতা।
★প্রকাশক :- শ্রীকালীকৃষ্ণ
চক্রবর্তী।
★গ্রন্থাকারে প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক জগদীশ গুপ্তের "মহিষী" উপন্যাসটি ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- কথাসাহিত্যিক জগদীশ গুপ্তের লেখা "মহিষী" (১৯২৯) উপন্যাসটিই একমাত্র তাঁর ফ্রয়েডীয় মনস্তত্ত্ব লক্ষণ সম্পন্ন উপন্যাস।
৩) "পুতুল নাচের ইতিকথা" (২২ই মে,
১৯৩৬/জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪৩) --- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
★প্রকাশনা :- "ডি. এম. লাইব্রেরি", কলকাতা।
★তথ্য :- এটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় উপন্যাস এবং চতুর্থ মুদ্রিত গ্রন্থ। সমালোচকদের মতে, এটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃত।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- এই উপন্যাসটি কলকাতা থেকে ঔপন্যাসিক ও রম্যকার (রায়বাহাদুর) শ্রীজলধর সেন (১৮৬০- ১৯৩৯) সম্পাদিত মাসিক "ভারতবর্ষ" [প্রথম প্রকাশ : জুন, ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দ/১লা আষাঢ়, ১৩২০ বঙ্গাব্দ এবং প্রথম সম্পাদক : শ্রীদ্বিজেন্দ্রলাল রায় (১৮৬৩-১৯১৩)] পত্রিকায় বাংলা ১৩৪১ সালের পৌষ থেকে ১৩৪২ সালের অগ্রহায়ণ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে
প্রকাশিত হয়।
★গ্রন্থাকারে প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"পুতুল নাচের ইতিকথা" উপন্যাসটি ২২ই মে, ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে (জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪৩ বঙ্গাব্দ) প্রথম গ্রন্থাকারে (বই আকারে) প্রকাশিত হয়।
★উপন্যাসের ধরন :- এটি একটি সামাজিক উপন্যাস।
★উপন্যাসের পটভূমি :- এই উপন্যাসটি পূর্ববঙ্গের পটভূমিতে রচিত হয়।
★মূল বা কেন্দ্রীয় বা প্রধান চরিত্র :- 'কুসুম'।
★উল্লেখযোগ্য চরিত্র :- 'কুসুম', 'হারু ঘোষ', 'শশী', 'শশীর পিতা' প্রমুখ।
★সর্বমোট অনুবাদ :- এই উপন্যাসটি ইংরেজি ভাষা এবং অন্যান্য ১২টি (গুজরাতি, হিন্দি, তেলেগু, মালয়ালম, তামিল, মারাঠি, সিন্ধি, ওড়িয়া, পাঞ্জাবি, অসমীয়া, চেক ও হাঙ্গেরিয়ান) ভাষাসহ সর্বমোট ১৩টি ভাষায় ১৩ বার অনুবাদ হয়। তার মধ্যে প্রথম অনুবাদ, ইংরেজি অনুবাদ ও হিন্দি অনুবাদ নিম্নে দেওয়া হল ---
★প্রথম অনুবাদ :- গুজরাতি ভাষা : এই উপন্যাসটি অনুবাদক শ্রীকান্ত ত্রিবেদী ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে "মাটিনা মহেল" ("Matina Mahel") নামে গুজরাতি ভাষায় অনুবাদ করেন। উপন্যাসটি বোম্বাইয়ের গোরগাঁও থেকে "চেতন প্রকাশন গৃহঃ লিঃ" প্রকাশ করেন।
★ইংরেজি অনুবাদ :- এই উপন্যাসটি অনুবাদক শচীন্দ্রলাল ঘোষ ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে "The Puppet's Tale" ("দ্য পাপেট'স টেল") নামে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন। উপন্যাসটি নতুন দিল্লি থেকে "সাহিত্য অকাদেমি" ("Sahitya
Academy") এবং "সাহিত্য অকাদেমি" ("Sahitya Academy") ও ইউনেস্কো ("UNESCO")-র যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত হয়।
★হিন্দি অনুবাদ :- এই উপন্যাসটি অনুবাদক প্রবোধকুমার মজুমদার ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে "কটপুতলিয়োঁ কা ইতিহাস" ("Katputliyon ka Itihas") নামে হিন্দি ভাষায় অনুবাদ করেন। উপন্যাসটি উত্তরপ্রদেশের বেনারস থেকে "সরস্বতী প্রেস" প্রকাশ করেন।
★চলচ্চিত্র নির্মাণ :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"পুতুল নাচের ইতিকথা" (২২ই মে, ১৯৩৬/জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪৩) উপন্যাসটি ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে একজন বাঙালি তথা ভারতীয় পরিচালক (চলচ্চিত্রকার) ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক অসিতকুমার বন্ধ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় চলচ্চিত্রতে রুপায়িত হয়।
৪) "পদ্মা নদীর মাঝি" (১২ই জুলাই, ১৯৩৬/আষাঢ়, ১৩৪৩) --- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
★প্রকাশনা :- "গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স", কলকাতা।
★তথ্য :- সমালোচকদের মতে, এটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃত।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- এই উপন্যাসটি কলকাতা থেকে শ্রীসঞ্জয় ভট্টাচার্য (১৯০৯-১৯৬৯) সম্পাদিত (সম্পাদক) ও শ্রীনারায়ণ চৌধুরী প্রকাশিত (প্রকাশক) মাসিক "পূর্বাশা" [প্রথম প্রকাশ :- ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ/বৈশাখ, ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ] পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
★গ্রন্থাকারে প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"পদ্মা নদীর মাঝি" উপন্যাসটি ১২ই জুলাই, ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে (আষাঢ়, ১৩৪৩ বঙ্গাব্দ) প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
★উপন্যাসের ধরন :- এটি একটি আঞ্চলিক উপন্যাস।
★উপন্যাসের মূল উপজীব্য বিষয় :- পূর্ববঙ্গের পদ্মা নদীর ধীবর সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রা এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য বিষয়।
★উল্লেখযোগ্য চরিত্র :- 'কুবের', 'কপিল', 'হোসেন মিয়া', 'রাসু', 'ধনঞ্জয়', 'পীতম মাঝি', 'মালা', 'গণেষ', 'আমিনুদ্দি', 'রসুল', 'ফাতেমা' প্রমুখ।
★সর্বমোট অনুবাদ :- এই উপন্যাসটি ইংরেজি ভাষা (২ বার) এবং অন্যান্য ১৩টি (হিন্দি, মালয়ালম, কন্নড়, তামিল, ওড়িয়া, অসমিয়া, সুইডিশ, চেক, হাঙ্গেরিয়, চীনা, শ্লোভাক, ডাচ ও জার্মান) ভাষাসহ সর্বমোট ১৪টি ভাষায় ১৫ বার অনুবাদ হয়। তার মধ্যে উপন্যাসটির প্রথম (হিন্দি) অনুবাদ, ইংরেজি (২টি) অনুবাদ ও হিন্দি অনুবাদ নিম্নে দেওয়া হল ---
★প্রথম অনুবাদ :- হিন্দি অনুবাদ : এই উপন্যাসটি অনুবাদক প্রবোধকুমার মজুমদার ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে "পদ্মা নদী কা মাঝি" ("Padma Nadi ka Majhi") নামে হিন্দি ভাষায় অনুবাদ করেন। উপন্যাসটি উত্তরপ্রদেশের বেনারস থেকে "সরস্বতী প্রেস" ("Saraswati Press") প্রকাশ করেন।
★ইংরেজি অনুবাদ :- (ক) এই উপন্যাসটি অনুবাদক হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে "The Boatman of the Padma" ("দ্য বোটম্যান অফ দ্য পদ্মা") নামে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন। উপন্যাসটি বোম্বাই থেকে "কুতুব পাবলিশার্স" ("Kutub
Publishers") প্রকাশ করেন।
(খ) এছাড়া এই উপন্যাসটি অনুবাদক বারবারা পেইনটার ও ইয়ান ল্যাভলক ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে "Padma River Boatman" ("পদ্মা রিভার বোটম্যান") নামে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন। উপন্যাসটি অস্ট্রেলিয়া থেকে "ইউনিভার্সিটি অফ কুইনসল্যান্ড প্রেস" ("University
of Queensland Press") ['UNESCO' (ইউনেস্কো)-র একটি প্রকল্পভুক্ত প্রকাশনা] প্রকাশ করেন।
★হিন্দি অনুবাদ :- উপরে তথ্য ('প্রথম অনুবাদ'-এ) দেওয়া আছে।
★চলচ্চিত্র নির্মাণ :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"পদ্মা নদীর মাঝি" (১২ই জুলাই, ১৯৩৬/আষাঢ়, ১৩৪৩) উপন্যাস অবলম্বনে ভিত্তি করে ১৬ই মে, ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে একজন ভারতীয় বাঙালি তথা বিখ্যাত ভারতীয় পরিচালক (চলচ্চিত্রকার) গৌতম ঘোষ (১৯৫০ ---) পরিচালিত (চলচ্চিত্রায়িত)
ও সম্পাদক মলয় ব্যানার্জি সম্পাদিত "পদ্মা নদীর মাঝি"-এই একই নামে বাংলা ভাষায় নির্মিত একটি বাংলাদেশ এবং ভারতের যৌথভাবে নির্মিত চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।
৫) "চতুষ্কোণ" (রচনাকাল : ১৫ই মে, ১৯৪২ ও প্রকাশকাল : ১৯৪৮) --- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
★প্রকাশনা :- "ডি. এম. লাইব্রেরি", কলকাতা।
★গ্রন্থাকারে প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"চতুষ্কোণ" উপন্যাসটি ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম গ্রন্থাকারে (বই আকারে) প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- ১৫ই মে, ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে রচিত ও ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "চতুষ্কোণ" উপন্যাসটিতে সবচেয়ে বেশি ফ্রয়েডীয় মনস্তত্ত্বের প্রভাব পড়েছে। উপন্যাসটিতে রয়েছে কয়েকটি যুবক-যুবতির অস্বাভাবিক মনশ্চারণার কথা। নর-নারীর যৌনতত্ত্বের ওপর রচিত হয়েছে এই উপন্যাসটি।
★মূল বা কেন্দ্রীয় বা প্রধান চরিত্র :- 'রাজকুমার' ('রাজু')।
★উল্লেখযোগ্য চরিত্র :- 'রাজকুমার' ('রাজু'), 'রিনি', 'সরসী', 'মালতী', 'কালী', 'শ্যামল' প্রমুখ।
৬) "জাগরী" (অক্টোবর, ১৯৪৫) --- সতীনাথ ভাদুড়ী।
★তথ্য :- সমালোচকদের মতে, এটি সতীনাথ ভাদুড়ীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃত।
★প্রকাশনা :- "লালচে নিউজপ্রিন্ট" প্রকাশনী, কলকাতা।
★গ্রন্থাকারে প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ীর "জাগরী" উপন্যাসটি অক্টোবর, ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
★লেখক উপন্যাসটি রচনা করেন :- বিহারের ভাগলপুরের জেলে বসে।
★উপন্যাসের পটভূমি :- এই উপন্যাসটি "১৯৪২ সালের 'আগস্ট আন্দোলন' " (যা 'ভারত ছাড়ো আন্দোলন' নামেও পরিচিত)-এর পটভূমিতে রচিত।
★উল্লেখযোগ্য চরিত্র :- 'বিলু', 'নীলু', 'বাবা', 'মা' প্রমুখ।
★উপন্যাসের প্রথম শ্রোতা :- বিহারের ভাগলপুরের জেলে বসে সতীনাথ ভাদুড়ী প্রখ্যাত হিন্দি সাহিত্যিক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী ফণীশ্বরনাথ রেণু (১৯২১-১৯৭৭)-কে "জাগরী" (অক্টোবর, ১৯৪৫) উপন্যাসটি প্রথম পাঠ করে শোনান। এই ফণীশ্বরনাথ রেণু (১৯২১-১৯৭৭)-ই হলেন সতীনাথ ভাদুড়ীর "জাগরী" (অক্টোবর, ১৯৪৫) উপন্যাসের প্রথম শ্রোতা।
★পুরস্কার প্রাপ্তি :- এই উপন্যাসটির জন্য প্রথম সাহিত্যিক হিসেবে সতীনাথ ভাদুড়ী ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার "রবীন্দ্র পুরস্কার" লাভ করেন।
★ইংরেজি অনুবাদ :- অনুবাদক লীলাময় (লীলা) রায় "জাগরী" উপন্যাসটির ইংরেজি অনুবাদ করেন --- "The
Vigil" নামে। এই ইংরেজি অনুবাদটি "UNESCO" ("ইউনেস্কো") থেকে প্রকাশিত হয়।
৭) "তেইশ বছর আগে পরে" (অক্টোবর, ১৯৫৩/মহালয়া, ১৩৬০) --- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
★প্রকাশনা :- "ক্যালকাটা পাবলিশার্স", কলকাতা।
★প্রকাশক :- শ্রীক্ষিতীশ সরকার।
★গ্রন্থাকারে প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"তেইশ বছর আগে পরে" উপন্যাসটি অক্টোবর, ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে (মহালয়া, ১৩৬০ বঙ্গাব্দ) প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- "মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র" [নবম খণ্ড]-তে প্রকাশিত কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়েরিতে উল্লেখ পাওয়া যায যে, --- তিনি এই উপন্যাসটি কলকাতার "ক্যালকাটা পাবলিশার্স"-এর প্রকাশক শ্রীক্ষিতীশ সরকারের অনুরোধে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্গাপুজোর আগেই সম্পূর্ণ করে ছাপার জন্য তাঁকে দিয়ে দেন। যদিও লেখকের অভিপ্রায় ছিল দুর্গাপুজোর পরে সেটি সম্পূর্ণ করার। দারিদ্র্য ও অসুস্থতার আক্রমণের মধ্যেই মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উপন্যাসটি লিখে শেষ করেন। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে (ভাদ্র, ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ) "বিচিত্রা" পত্রিকায় "ব্যথার পূজা" নামে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ছোটগল্প প্রকাশিত হয়। উক্ত ঘটনার তেইশ বছর পরে উপন্যাসের নতুন এক সূত্রপাতের ফলেই "তেইশ বছর আগে পরে" শীর্ষক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "তেইশ বছর আগে পরে" (অক্টোবর, ১৯৫৩/মহালয়া, ১৩৬০) গ্ৰন্থটি লিখিত হয়।
★উপন্যাসের উৎস ও উপকরণ :- ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে (ভাদ্র, ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ) "বিচিত্রা" পত্রিকায় প্রকাশিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"ব্যথার পূজা" গল্পটিই তাঁর বর্তমান উপন্যাস "তেইশ বছর আগে পরে" (অক্টোবর, ১৯৫৩/মহালয়া, ১৩৬০)-এর উৎস ও উপকরণ।
৮) "হাজার চুরাশির মা" (১৯৭৪) --- মহাশ্বেতা দেবী।
★প্রকাশনা :- "করুণা প্রকাশনী", কলকাতা।
★প্রচ্ছদ শিল্পী :- শ্রীখালেদ চৌধুরী (১৯১৯-২০১৪)।
★গ্রন্থাকারে প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর "হাজার চুরাশির মা" উপন্যাসটি ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
★প্রেক্ষাপট বা পটভূমি :- ১৯৭০ সালের দশকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের "নকশাল আন্দলন"-এর প্রেক্ষাপট বা পটভূমিতে এই উপন্যাসটি রচিত হয়।
★উল্লেখযোগ্য চরিত্র :- 'সুজাতা', 'ব্রতী, 'দিব্যনাথ' প্রমুখ।
★পুরস্কার প্রাপ্তি (পুরস্কার প্রাপ্ত উপন্যাস) :- এই উপন্যাসটির জন্য কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী পঞ্চম বাংলা (বাঙালি) সাহিত্যিক হিসেবে ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা তাঁর হাতে এই পুরস্কারটি তুলে দেন।
★চলচ্চিত্র নির্মাণ :- কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর "হাজার চুরাশির মা" (১৯৭৪) উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে একজন বিশিষ্ট ভারতীয় হিন্দি পরিচালক (চলচ্চিত্রকার) গোবিন্দ নিহালনি হিন্দি ভাষায় "হাজার চৌরাসি কি মা " ("Hazar Chourasi ki Maa") নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এই চলচ্চিত্রটি "শ্রেষ্ঠ কাহিনিচিত্র" বিভাগে "জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার" অর্জন করেছিল।
¤ ছোটগল্প :-
১) "নারী ও
নাগিনী" (পত্রিকায় প্রকাশ : ১৯৩৪/১৩৪১) --- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এই গল্পটি ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে (১৩৪১ বঙ্গাব্দ) কলকাতা থেকে সাহিত্যিক শ্রীসাগরময় ঘোষ (১৯১২-১৯৯৯) সম্পাদিত শারদীয়া ''দেশ'' [প্রথম প্রকাশ : ২৪শে নভেম্বর, ১৯৩৩] পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- পরে এই গল্পটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের "নারী ও নাগিনী" (১৯৩৪) গল্পগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়। পরে এই গল্পটি জুন, ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে "ইন্ডিয়ান এসোসিয়েটেড পাবলিশিং হাউস" থেকে প্রকাশিত তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের "নির্বাচিত ছোটগল্প" নামক গল্প-সংকলন গ্রন্থের প্রথম গল্প হিসাবে নির্বাচিত হয়ে ঐ গল্প-সংকলন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়।
২) "অতসীমামী" (পত্রিকায় প্রকাশ : ১৯২৮) --- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এই গল্পটি কলকাতা থেকে প্রকাশিত লেখক শ্রীউপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় (১৮৮১-১৯৬০) সম্পাদিত ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে মাসিক "বিচিত্রা" [প্রথম প্রকাশ : ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ/আষাঢ়, ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ] পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- পরে এই গল্পটি কলকাতার "গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স" থেকে প্রকাশিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "অতসীমামী" (১৮ই আগস্ট, ১৯৩৫/ভাদ্র, ১৩৪২) গল্পগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়।
৩) "সরীসৃপ" --- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এই গল্পটি কলকাতা থেকে সাহিত্য-সমালোচক শ্রীসজনীকান্ত দাস (১৯০০-১৯৬২) সম্পাদিত মাসিক "বঙ্গশ্রী" [প্রথম প্রকাশ : ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ] পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- পরে এই গল্পটি কলকাতার "গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স" থেকে প্রকাশিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "সরীসৃপ" (১৭ই আগস্ট, ১৯৩৯/শ্রাবণ, ১৩৪৬) গল্পগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত। পরে এই গল্পটি কলকাতার "বেঙ্গল পাবলিশার্স" থেকে প্রকাশিত ও সাহিত্য-সমালোচক শ্রীজগদীশ ভট্টাচার্য সম্পাদিত "মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প" (জুলাই-আগস্ট, ১৯৫০/শ্রাবণ, ১৩৫৭) নামক গল্প-সংকলন গ্রন্থেরও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া এই গল্পটি "মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প" (জুলাই-আগস্ট, ১৯৫০/শ্রাবণ, ১৩৫৭) নামক গল্প-সংকলন গ্রন্থের পরবর্তী সংস্করণ [১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার "বেঙ্গল পাবলিশার্স" থেকে প্রকাশিত ও সাহিত্য-সমালোচক শ্রীজগদীশ ভট্টাচার্য সম্পাদিত]-এরও গ্রন্থেরও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
৪) "তারিণী মাঝি" (পত্রিকায় প্রকাশ : ১৯৩৫) --- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এই গল্পটি ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই গল্পে ময়ূরাক্ষী নদীকে কেন্দ্র করেই মানুষের জীবনযাত্রা গড়ে উঠেছে। এছাড়া গল্পে আছে বন্যার তাণ্ডব আর সমুদ্র মন্থনে রয়েছে অনাবৃষ্টির দাবদাহ। তাছাড়া তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের "তারিণী মাঝি" গল্পে প্রকৃতি ও নিয়তির অমোঘ লীলা স্থান পেয়েছে। 'তারিণী মাঝি' ও তাঁর স্ত্রী 'সুখী'-র দিনযাপন হত ময়ূরাক্ষী নদীর জন্য, আবার সেই ময়ূরাক্ষী নদীর জন্যই একদিন তাদের প্রাণ গেল। এই গল্পে অন্ধ জৈব সত্তার জয় ঘোষিত হয়েছে। অনিবার্য মৃত্যুর সঙ্গে আত্মরক্ষার নিষ্ঠুর সংগ্রামে ভালোবাসার জনকেও মানুষের বিসর্জন দিতে বাধে না -- গল্পের শেষে এই সত্যের প্রকাশ ঘটেছে নাটকীয়তার মাধ্যমে। নদীর ঘূর্ণিতে পড়ে 'তারিণী মাঝি' নিজেকে বাঁচিয়েছে বউ 'সুখী'-র বন্ধন থেকে মুক্ত করে। এই গল্পের অনিবার্যতা, শিল্পনৈপুণ্য বাংলা সাহিত্য এক বিশেষ সম্পদ।
★প্রধান বা মূল বা কেন্দ্রীয় চরিত্র :- 'তারিণী মাঝি'।
★উল্লেখযোগ্য চরিত্র :- 'তারিণী মাঝি', 'সুখী', 'কেলে' প্রমুখ।
৫) "বেদেনী" (পত্রিকায় প্রকাশ : ১৯৪৩) --- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এই গল্পটি ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- লেখক (গল্পকার) তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
"বেদেনী" গল্পের এক জায়গায় বলেছেন, --- "বিচিত্র জাত বেদেরা। জাতি জিজ্ঞাসা করিলে বলে, বেদে। তবে ধর্ম ইসলাম আচারে পুরা হিন্দু, মনসা.... ।"
৬) "প্রাগৈতিহাসিক" --- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
★তথ্য :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই গল্পটি কলকাতার "গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স" থেকে প্রকাশিত তাঁর "প্রাগৈতিহাসিক" (২০ই এপ্রিল, ১৯৩৭/বৈশাখ, ১৩৪৪) গল্পগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত প্রথম গল্প। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "প্রাগৈতিহাসিক" (২০ই এপ্রিল, ১৯৩৭/বৈশাখ, ১৩৪৪) গল্পগ্রন্থটিতে গল্পের সংখ্যা -- ১০টি। রচনাকাল অনুসারে গল্পগুলোকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে; --- এই গল্পগ্রন্থটির প্রথম রচনা 'প্রাগৈতিহাসিক';
এরপর ক্রমানুসারে রয়েছে :- 'চোর', 'মাটির সাকি', 'যাত্রা', 'প্রকৃতি', 'ফাঁসি', 'ভূমিকম্প', 'অন্ধ', 'চাকুরি' এবং 'মাত্রার রহস্য''।
★গল্পের সুচারুরূপে বিন্যাস :- "প্রাগৈতিহাসিক" গল্পের প্রধান চরিত্র ভিখুর নৃশংসতা ও যৌনজীবনের জটিলতার পরম্পরা অত্যন্ত সুচারুরূপে বিন্যস্ত করেছেন গল্পকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঝরঝরে ভাষায় লেখা ''প্রাগৈতিহাসিক'' গল্পটি আজও বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
★মূল বা কেন্দ্রীয় চরিত্র :- 'ভিখু'।
★উল্লেখযোগ্য চরিত্র :- 'ভিখু', 'বৈকুণ্ঠ সাহা', 'পেহ্লাদ বাগদী', 'পাঁচি', 'বসির', 'বিনু মাঝি' প্রমুখ।
৭) "রাসের মেলা" --- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এই গল্পটি কলকাতা থেকে কবি-ঔপন্যাসিক শ্রীসঞ্জয় ভট্টাচার্য (১৯০৯-১৯৬৯) সম্পাদিত ও লেখক শ্রীনারায়ণ চৌধুরী প্রকাশিত কলকাতা থেকে মাসিক "পূর্বাশা" [প্রথম প্রকাশ : ১৯৩২/বৈশাখ, ১৩৩৯ (কুমিল্লা থেকে)] পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- পরে এই গল্পটি কলকাতার "বেঙ্গল পাবলিশার্স" থেকে প্রকাশিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"পরিস্থিতি" (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, ১৯৪৬/আশ্বিন, ১৩৫৩) গল্প-সংকলন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
কলকাতার "অরুণা প্রকাশনী" থেকে প্রকাশিত ও লেখক শ্রীযুগান্তর চক্রবর্তী সম্পাদিত "অপ্রকাশিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়" (আগস্ট, ১৯৭৬/শ্রাবণ, ১৩৮৩) নামক ডায়েরি ও চিঠিপত্রমূলক গ্রন্থ (রচনা)-এ সাহিত্য-সমালোচক যুগান্তর চক্রবর্তী লিখিত টীকাভাষ্য থেকে জানা যায় যে, কলকাতার "বেঙ্গল পাবলিশার্স" থেকে প্রকাশিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"পরিস্থিতি" (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, ১৯৪৬/আশ্বিন, ১৩৫৩) গল্প-সংকলন গ্রন্থটির প্রথম প্রস্তাবিত নাম ছিল :- "রাসের মেলা"। "প্রকাশকের সঙ্গে এই একই নামে চুক্তি হয়েছিল"। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
"রাসের মেলা" গল্পটি প্রথমে কবি-প্রাবন্ধিক শ্রীসুধীন্দ্রনাথ দত্ত (১৯০১-১৯৬০) সম্পাদিত কলকাতা থেকে মাসিক "পরিচয়" [প্রথম প্রকাশ : ১লা অক্টোবর, ১৯৩১ (কলকাতা থেকে)] পত্রিকার জন্য নির্ধারিত ছিল, পরে এই গল্পটি কবি-ঔপন্যাসিক শ্রীসঞ্জয় ভট্টাচার্য (১৯০৯-১৯৬৯) সম্পাদিত ও লেখক শ্রীনারায়ণ চৌধুরী প্রকাশিত কলকাতা থেকে মাসিক "পূর্বাশা" [প্রথম প্রকাশ : ১৯৩২/বৈশাখ, ১৩৩৯ (কুমিল্লা থেকে)] পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
৮) "শিল্পী" --- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
★তথ্য :- কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই গল্পটি কলকাতার "বেঙ্গল পাবলিশার্স" থেকে প্রকাশিত তাঁর "পরিস্থিতি" (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, ১৯৪৬/আশ্বিন, ১৩৫৩) গল্প-সংকলন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত। পরে এই গল্পটি সেই কলকাতার "বেঙ্গল পাবলিশার্স" থেকে প্রকাশিত ও সাহিত্য-সমালোচক শ্রীজগদীশ ভট্টাচার্য সম্পাদিত "মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
শ্রেষ্ঠ গল্প" (জুলাই-আগস্ট, ১৯৫০/শ্রাবণ, ১৩৫৭) নামক গল্প-সংকলন গ্রন্থ-এরও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া এই গল্পটি কলকাতার "ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড
পাবলিশিং কোং প্রাঃ লিঃ" থেকে প্রকাশিত স্বয়ং লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক বাছাই-করা কুড়িটি গল্পের সংকলন-গ্রন্থ "মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বনির্বাচিত গল্প" (জুন, ১৯৫৬/৭ই আষাঢ়, ১৩৬৩)-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
৯) "পয়োমুখম" --- জগদীশ গুপ্ত।
★তথ্য :- কথাসাহিত্যিক জগদীশ গুপ্তের এই গল্পটি গল্পকার মনি হায়দার ও বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ড. সরকার আবদুল মান্নান সম্পাদিত ''জগদীশ গুপ্তের শ্রেষ্ঠ গল্প'' নামক গল্প-সংকলন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত তৃতীয় গল্প। জগদীশ গুপ্ত রচিত ''জগদীশ গুপ্তের শ্রেষ্ঠ গল্প'' নামক গল্প-সংকলন গ্রন্থটিতে রয়েছে মোট তেইশটি গল্প। ক্রমানুসারে এই গল্পগুলো হল --- 'বিধবা রতিমঞ্জরী', 'দিবসের শেষে', 'পয়োমুখম', 'শশাঙ্ক কবিরাজের স্ত্রী', 'চন্দ্র সূর্য যতদিন', 'আদি কথার একটি', 'অরূপের রাস', 'শঙ্কিত অভয়া', 'হাড়', 'পাইক শ্রীহরি প্রামাণিক', 'চার পয়সায় এক আনা', 'বোনঝি গুঞ্জমালা', 'কলঙ্কিত সম্পর্ক', 'রসাভাসা', 'আঠারো কলার একটি', 'গুরুদয়ালের অপরাধ', 'মায়ের মৃত্য দিন', 'যাহা ঘটিল তাহাই সত্য', 'তৃষিত আত্মা', 'প্রলয়ঙ্করী যষ্ঠী', 'পুরাতন ভৃত্য', 'আমি ও দেবরাজের স্ত্রী' এবং 'পামর'।
১০) "শঙ্কিতা অভয়া" --- জগদীশ গুপ্ত।
★তথ্য :- কথাসাহিত্যিক জগদীশ গুপ্তের এই গল্পটি গল্পকার মনি হায়দার ও বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ড. সরকার আবদুল মান্নান সম্পাদিত ''জগদীশ গুপ্তের শ্রেষ্ঠ গল্প'' নামক গল্প-সংকলন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত অষ্টম গল্প। জগদীশ গুপ্ত রচিত ''জগদীশ গুপ্তের শ্রেষ্ঠ গল্প'' নামক গল্প-সংকলন গ্রন্থটিতে রয়েছে মোট তেইশটি গল্প। ক্রমানুসারে এই গল্পগুলো হল --- 'বিধবা রতিমঞ্জরী', 'দিবসের শেষে', 'পয়োমুখম', 'শশাঙ্ক কবিরাজের স্ত্রী', 'চন্দ্র সূর্য যতদিন', 'আদি কথার একটি', 'অরূপের রাস', 'শঙ্কিত অভয়া', 'হাড়', 'পাইক শ্রীহরি প্রামাণিক', 'চার পয়সায় এক আনা', 'বোনঝি গুঞ্জমালা', 'কলঙ্কিত সম্পর্ক', 'রসাভাসা', 'আঠারো কলার একটি', 'গুরুদয়ালের অপরাধ', 'মায়ের মৃত্য দিন', 'যাহা ঘটিল তাহাই সত্য', 'তৃষিত আত্মা', 'প্রলয়ঙ্করী যষ্ঠী', 'পুরাতন ভৃত্য', 'আমি ও দেবরাজের স্ত্রী' এবং 'পামর'।
১১) "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) --- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
★পত্রিকায় প্রকাশ :- গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গল্পটি ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে (বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮ বঙ্গাব্দ) শ্রীরবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের ভাগ্নী (লেখিকা) শ্রীসরলা দেবী সম্পাদিত (১৮৭২-১৯৪৫) "ভারতী" [প্রথম প্রকাশ : ২৯শে জুলাই, ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দ/১৫ই শ্রাবণ, ১২৮৪ বঙ্গাব্দ এবং প্রথম সম্পাদক : দ্বিজেন্দ্রনাথ
ঠাকুর (১৮৪০-১৯২৬)] পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
★তথ্য :- পরে এই গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "গল্পগুচ্ছ" (১৯২৬/শ্রাবণ, ১৩৩৩) গল্প-সংকলন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই গল্পে একজন নিসঙ্গ নারীর কথা তুলে ধরা হয়েছে। এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত শ্রেষ্ঠ ছোটগল্পগুলোর একটি বলে বিবেচিত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "গল্পগুচ্ছ" (১৯২৬/শ্রাবণ, ১৩৩৩) গল্প-সংকলন গ্রন্থ-এর অখণ্ড সংস্করণটি মোট ৯১টি গল্প নিয়ে রচিত হয়েছে বা অখণ্ড সংস্করণে মোট ৯১টি গল্প রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "গল্পগুচ্ছ" (১৯২৬/শ্রাবণ, ১৩৩৩) গল্প-সংকলন গ্রন্থটির প্রথম খণ্ডে ১২৯১ বঙ্গাব্দ (১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দ) হইতে ১৩০০ বঙ্গাব্দের (১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দ) মধ্যে প্রকাশিত গল্পগুলি প্রথম প্রকাশের ক্রম-অনুযায়ী সংকলিত হয়। গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৯৮ বঙ্গাব্দ (১৮৯১ খ্রিস্টাব্দ) থেকে ১৩১০ বঙ্গাব্দের (১৯০৩ খ্রিস্টাব্দ) মধ্যে তাঁর "গল্পগুচ্ছ" (১৯২৬/শ্রাবণ, ১৩৩৩) গল্প-সংকলন গ্রন্থের বেশিরভাগ গল্পগুলি লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যে ছোটগল্পের রুপস্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এটি একটি অমর কীর্তি। তাঁর এই "গল্পগুচ্ছ" (১৯২৬/শ্রাবণ, ১৩৩৩) গল্প-সংকলন গ্রন্থ-এর মধ্যে রয়েছে --- 'পোস্টমাস্টার' (১২৯৮), 'ব্যবধান' (১২৯৮), 'খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' (অগ্রহায়ণ, ১২৯৮), 'একরাত্রি' (জ্যৈষ্ঠ, ১২৯৯), 'একটা আষাঢ়ে গল্প' (আষাঢ়, ১২৯৯), 'ছুটি' (পৌষ, ১২৯৯), 'কাবুলিওয়ালা' (অগ্রহায়ণ, ১২৯৯), 'অসম্ভব কথা' (আষাঢ়, ১৩০০), 'সমাপ্তি' (আশ্বিন-কার্তিক, ১৩০০), 'মেঘ ও রৌদ্র', (আশ্বিন-কার্তিক, ১৩০১), 'দিদি' (চৈত্র, ১৩০১), 'ক্ষুধিত পাষাণ' (শ্রাবণ, ১৩০২), 'অতিথি' (১৮৯৫/ভাদ্র-কার্তিক, ১৩০২), 'ইচ্ছাপূরণ' (ভাদ্র-কার্তিক, ১৩০২), 'মণিহারা' (অগ্রহায়ণ, ১৩০৫), 'ফেল' (আশ্বিন, ১৩০৭), 'নষ্টনীড়' (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮), 'মাল্যদান' (চৈত্র, ১৩০৯), 'গুপ্তধন' (কার্তিক, ১৩১৪), 'হৈমন্তী' (জ্যৈষ্ঠ, ১৩২১), 'স্ত্রীর পত্র' (শ্রাবণ, ১৩২১), 'অপরিচিতা' (কার্তিক, ১৩২১), 'রবিবার' (১৩৪৬), 'ল্যাবরেটরি' (১৩৪৭) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য গল্প।
★গল্পের পটভূমি :- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
সাহিত্য-সমালোচক ও অনুবাদক ম্যারি এম. লাগো [Mary M. Lago]-র মতে, --- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) গল্পের ইংরেজি অনুবাদ (ম্যারি এম. লাগো ও সুপ্রিয় সেনের অনুবাদ) তিনবার মুক্তি পায় : ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে ধারাবাহিক বিন্যাসে, ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে রচিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাল্পনিক সংগ্রহের ছোটগল্প-এর অংশ হিসেবে এবং ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে একটি বিশেষ সংক্ষিপ্ত কাহিনি-সংগ্রহের অংশ হিসাবে, "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) প্রকাশিত হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) গল্পটি ইঙ্গিত দেয় যে, এই গল্পটি রচিত হয়ে থাকতে পারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড়ো ভাই জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর; জ্যোতিরিন্দ্রনাথ
ঠাকুরের স্ত্রী কাদম্বরী দেবী (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিয়ের পরেই আত্মহত্যা করেছেন); এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (যিনি কবিতা পড়া এবং লেখার সাথে অনেক সময় কাদম্বরীর দেবীর সাথে কাটিয়েছিলেন) মধ্যেকার সম্পর্কের উপর নির্ভর করে।
★তিনটি কেন্দ্রীয় বা মূল চরিত্র :-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) গল্পটি 'চারুলতা' ('চারু'), 'অমল' ও 'ভূপতি'-এই তিনটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
★উল্লেখযোগ্য চরিত্র :- 'চারুলতা', 'অমল', 'ভূপতি', 'উমাপদ' প্রমুখ।
★গল্পের সারমর্ম :- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নষ্টনীড়" গল্পটি উনিশ শতকের শেষের দিকের বাংলার পটভূমিতে রচিত, যা বাংলার নবজাগরণ বা বেঙ্গল রেনেসাঁর অংশ এবং ব্রাহ্মসমাজের দ্বারা প্রভাবিত হয় এমন রচনাগুলির মধ্যে একটি যা বাঙালিদের জীবন সম্পর্কে অনুসন্ধান করে। উদার ধারনা সত্ত্বেও, 'ভূপতি' তার স্ত্রী 'চারুলতা'র একাকীত্ব এবং অসন্তোষের প্রতি অন্ধ। তার ভাই 'অমল', যিনি 'চারুলতার মধ্যে প্রগাঢ় অনুভূতি জাগিয়ে তোলেন, তার সাথেই 'ভূপতি' বুঝতে পারেন যে তিনি কী হারিয়েছেন? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গল্পটি তিনটি কেন্দ্রীয় বা মূল চরিত্র --- 'চারুলতা' ('চারু'), 'অমল' ও 'ভূপতি'কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
★ইংরেজি অনুবাদ :-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) গল্পটির ইংরেজি অনুবাদ "ব্রোকেন নেস্ট" (ন্যাশনাল) ["Broken Nest" (National)] নামে করেছেন :- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাহিত্য-সমালোচক ও অনুবাদক মেরি এম. লাগো [Mary M. Lago] ও ভারতের সাহিত্য-সমালোচক ও অনুবাদক সুপ্রিয় সেন [Supriya Sen]। এই অনুবাদ গ্রন্থটি ২০০০ সালে নতুন দিল্লির "ম্যাকমিলান ইন্ডিয়া লিমিটেড" প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়।
★চলচ্চিত্র নির্মাণ :-
(ক) গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) গল্পের উপর ভিত্তি করে একজন বাঙালি তথা ভারতীয় বিখ্যাত পরিচালক ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায় (১৯২১-১৯৯২) ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে "চারুলতা" ["The Lonely Wife"] নামে বাংলা ভাষায় নির্মিত একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এই চলচ্চিত্রটিতে অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায় 'চারুলতা' ('চারু') চরিত্রে এবং অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় 'অমল' চরিত্রে, শৈলেন মুখোপাধ্যায় 'ভূপতি' চরিত্রে' ও শ্যামল ঘোষাল 'উমাপদ' চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত
এই চলচ্চিত্রটি ইংরেজিভাষী বিশ্বে "দ্য লোনলি ওয়াইফ" ("The Lonely Wife") নামে পরিচিত। সার্থক চিত্রায়নের প্রয়োজনে চলচ্চিত্রের গল্পের কাহিনি খানিকটা পরিবর্তন করা হয়েছে মূল গল্প "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮)-এর কাহিনি থেকে। এই চলচ্চিত্রটি ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে "বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব"-এ প্রদর্শিত হয় এবং সেখান থেকে থেকে "সিলভার বেয়ার পুরস্কার" পায়। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে "সেরা চলচ্চিত্র" হিসাবে "ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার"-এর "গোল্ডেন লোটাস পুরস্কার" অর্জন করে এবং ওই একই বছর ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে "ওসিআইসি" ("OCIC") পুরস্কার পায় এই চলচ্চিত্রটি।
(খ) গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) গল্পের উপর ভিত্তি করে আরেকটি বাংলা ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র একজন বাঙালি তথা ভারতীয় বিশিষ্ট পরিচালক অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় (১৯৬৫ ---) ২০১১ সালে "চারুলতা" নামে নির্মাণ করেন। এই চলচ্চিত্রে 'চারুলতা' ('চারু') চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
(গ) গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) গল্পকে ভিত্তি করে একজন বাঙালি তথা ভারতীয় পরিচালক রঙ্গন চক্রবর্তী "আমি চরুলতা" নামে বাংলা ভাষায় নির্মিত একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যা বর্তমানে নির্মাণাধীন। এই চলচ্চিত্রে 'ভূপতি' চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা রাহুল বসু এবং 'চারুলতা' ('চারু') চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায়।
(ঘ) গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নষ্টনীড়" (১৯০১/বৈশাখ-অগ্রহায়ণ, ১৩০৮) গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র 'চারুলতা' ('চারু') দ্বারা অনুপ্রেরিত হয়ে ২০১৬ সালে বাংলা ভাষায় নির্মিত একটি টেলিফিল্ম নির্মাণ করেছেন একজন বাংলাদেশী পরিচালক ও লেখক আলভী আহমেদ। টেলিফিল্মটির নামকরণ করা হয়েছে :- "চারুলতা ২০১৬"। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে 'চারুলতা'র চরিত্রটি বিশেষায়িত করা হয়েছে এই টেলিফিল্মতে। নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নওশীন। এছাড়াও আরো দুইটি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম ও কল্যাণ কোরাইয়া। এই টেলিফিল্মটি ২০১৬ সালের ঈদে দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত হয়েছিল।
¤ কবিতা :-
১) "টপ্পা-ঠুংরি" --- বিষ্ণু দে।
"বাসের একি শিং ভাঙা গোঁ।
যন্ত্রের এই খামখেয়াল।
এদিকে আর পঁচিশ মিনিট --
ওরে বিহঙ্গ মোর।"
- আলোচক : সৌম্য মাইতি
- যোগাযোগ : ৬২৯০৩৭৭১৩৪
- S.L.S.T বাংলা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে চাইলে ফোন করে যোগাযোগ করুন আমার ৬২৯০৩৭৭১৩৪ নম্বরে, অথবা আমার WhatssApp-তে ম্যাসেজ করুন ৮৭৬৮৮৩০২৩০ নম্বরে। ধন্যবাদ।
Post a Comment