নবম শ্রেণির 'সাহিত্য সঞ্চয়ন' বইয়ের সমস্ত উৎস
নবম শ্রেণির 'সাহিত্য সঞ্চয়ন' বইয়ের সমস্ত উৎস তথ্যসহকারে নিম্নে দেওয়া হল ---
¤ গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক :-
১) "কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি" : আলোচ্য কবিতাটির উৎস কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর "চণ্ডীমঙ্গল" কাব্যের আখেটিক খণ্ড তথা কালকেতুর উপাখ্যানের অন্তর্গত "কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ"।
২) "ধীবর বৃত্তান্ত" : কালিদাসের "অভিজ্ঞান শকুন্তলম্" নাটকের ষষ্ঠ অঙ্ক থেকে "ধীবর বৃত্তান্ত" নাট্যাংশটি নেওয়া হয়েছে। বাংলায় এটির তর্জমা করেছেন সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী।
৩) "ইলিয়াস" : লিও তলস্তয় রচিত "ইলিয়াস" গল্পটি ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে রচিত। গল্পটি তলস্তয়ের "Twenty Three Tales" নামক গল্প-সংকলন গ্রন্থে প্রকাশিত হয়। পাঠ্য গল্পটি সেই গল্পটির অনুবাদ। অনুবাদটি (তর্জমা) করেছেন মণীন্দ্র দত্ত।
৪) "দাম" : নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা "দাম" ছোটোগল্পটি ১৩৬৫ বঙ্গাব্দে "শারদীয়া তরুণের স্বপ্ন" পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়।
৫) "নব নব সৃষ্টি" : পাঠ্যাংশের প্রবন্ধটি সৈয়দ মুজতবা আলীর "মাম্ দোর পুনর্জন্ম" প্রবন্ধের সম্পাদিত অংশ। মূল প্রবন্ধগ্রন্থটির নাম "চতুরঙ্গ"। এই প্রবন্ধগ্রন্থটি ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ) কলকাতার "বেঙ্গল পাবলিশার্স" থেকে প্রকাশিত হয়।
৬) "হিমালয় দর্শন" : বেগম রোকেয়ার লেখা রচনাংশটির পূর্ণরূপ "কূপমণ্ডূকের হিমালয় দর্শন"। এই রচনাটি "মহিলা" পত্রিকার ১০ম বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা, কার্তিক ১৩১১ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়।
৭) "খেয়া" : কবিতাটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "চৈতালি" কাব্যগ্রন্থের ১৯ সংখ্যক কবিতা। এই কাব্যগ্রন্থটি ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে (আশ্বিন ১৩০৩ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থে মোট কবিতার সংখ্যা ৭৯টি। কবিতাটির রচনাকাল ১৮ই চৈত্র ১৩০২ বঙ্গাব্দ।
৮) "নোঙর" : কবিতাটি কবি অজিত দত্তের "শাদা মেঘ কালো পাহাড়" নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত এই কাব্যগ্রন্থটি কবির সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ। পরবর্তীতে অজিত দত্তের "শ্রেষ্ঠ কবিতা" (১৯৭০) নামক কবিতা-সংকলন গ্রন্থেও "নোঙর" কবিতাটি স্থান পেয়েছে।
৯) "আকাশে সাতটি তারা" : কবিতাটি কবি জীবনানন্দ দাশের "রূপসী বাংলা" কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। এই কাব্যগ্রন্থটি ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়। কিন্তু এটি কবির মৃত্যুর পর ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। কবিতাটি এই কাব্যগ্রন্থের ৬ সংখ্যক কবিতা। কবি এই কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গ করেন 'আবহমান বাংলা, বাঙালি'কে।
১০) "আবহমান" : কবিতাটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রচিত "অন্ধকার বারান্দা" কাব্যগ্রন্থের ৩০ সংখ্যক কবিতা। এই কাব্যগ্রন্থে মোট কবিতার সংখ্যা ৫১টি। কবিতাটির রচনাকাল ১৮ ভাদ্র ১৩৬৫ বঙ্গাব্দ।
"অন্ধকার বারান্দা" কাব্যগ্রন্থের প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয় এপ্রিল ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে (চৈত্র ১৩৬৭ বঙ্গাব্দ)। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতার "কৃত্তিবাস প্রকাশনী" থেকে কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ করেন। এর প্রচ্ছদ অঙ্কন করেন পূর্ণেন্দুশেখর পত্রী। কবি তাঁর এই দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গ করেন কথাসাহিত্যিক শ্রীসন্তোষকুমার ঘোষকে। সেপ্টেম্বর ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে এই কাব্যগ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় সংস্করণটি প্রকাশিত হয় কলকাতার "আনন্দ পাবলিশার্স প্রা লিঃ" থেকে। এর প্রচ্ছদ অঙ্কন করেন সুনীল শীল। পরবর্তী সময়ে "অন্ধকার বারান্দা" কাব্যগ্রন্থটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর "কবিতাসমগ্র-১" নামের কবিতা-সংকলন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে।
১১) "চিঠি" : স্বামী বিবেকানন্দের লেখা পাঠ্য প্রবন্ধটি "স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা" গ্রন্থের সপ্তম খণ্ডে (তৃতীয় সংস্করণ : আগস্ট ১৯৭৩) রয়েছে। এই গ্রন্থের এটি ৩৬০তম চিঠি। গ্রন্থটির প্রকাশক শ্রীস্বামী বিশ্বশ্রয়ানন্দ এবং প্রকাশন সংস্থা "উদ্বোধন কার্যালয়"।
"উদ্বোধন কার্যালয়" থেকে প্রকাশিত "পত্রাবলী : স্বামী বিবেকানন্দ" গ্রন্থের ৫৮৫ পৃষ্ঠায় পাঠ্য "চিঠি"টি স্বামীজি ইংরেজি ভাষায় লিখেছিলেন। তাঁর ইংরেজি চিঠিগুলির আবিষ্কারক মেরি লুই বার্ক। "কমপ্লিট ওয়ার্ক অব্ স্বামী বিবেকানন্দ" বইয়ের অষ্টম খণ্ডে মূল ইংরেজি চিঠিটি পাওয়া যায়। স্বামীজির লেখা মোট ৫৭৬টি চিঠি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৫৩টি বাংলা ভাষায়, ৪১৮টি ইংরেজিতে, ৩টি সংস্কৃতে এবং ২টি ফরাসি ভাষায় রচিত।
১২) "ভাঙার গান" : "ভাঙার গান" কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতাটির নাম "ভাঙার গান"। কাব্যগ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় আগস্ট ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে (শ্রাবণ ১৩৬১ বঙ্গাব্দ)। এই কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয় মেদিনীপুরবাসীর উদ্দেশ্যে। কারণ স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন মেদিনীপুরবাসী।
পাঠ্য গানটি অসহযোগ আন্দোলনের সময় রচিত। সুকুমাররঞ্জন দাশের অনুরোধে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ সম্পাদিত "বাঙালির কথা" নামক সাপ্তাহিক পত্রিকার জন্য কবি এই গানটি লেখেন এবং এটি ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ২০ জানুয়ারি ওই পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। "ভাঙার গান" কাব্যগ্রন্থটি ইংরেজ সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত হয় ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ১১ নভেম্বর।
১৩) "আমরা" : কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের "আমরা" কবিতাটি তাঁর "কুহু ও কেকা" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। এই কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে (১৩১৯ বঙ্গাব্দ)।
১৪) "নিরুদ্দেশ" : লেখক প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা "নিরুদ্দেশ" ছোটোগল্পটি তাঁর "সামনে চড়াই" গল্প-সংকলন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত। এই গল্প-সংকলন গ্রন্থটি ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে প্রথম প্রকাশিত হয়।
১৫) "রাধারাণী" : পাঠ্য "রাধারাণী" রচনাংশটি সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা "রাধারাণী" উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদ। এই উপন্যাসটি প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে। কিন্তু এটি ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে স্বতন্ত্র পুস্তকাকারে প্রথম প্রকাশিত হয়।
১৬) "চন্দ্রনাথ" : পাঠ্যাংশটি কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা "আগুন" উপন্যাসের প্রথমাংশের সম্পাদিত রূপ। এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ৯ অক্টোবর ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে (১৩৪৪ বঙ্গাব্দ)।
¤ সহায়ক পাঠ : প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়রি :-
১) "ব্যোমযাত্রীর ডায়রি" : ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৮ বঙ্গাব্দ) "সন্দেশ" পত্রিকার আশ্বিন-অগ্রহায়ণ সংখ্যায় সত্যজিৎ রায় লিখিত "ব্যোমযাত্রীর ডায়রি" কাহিনিটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই কাহিনির মধ্য দিয়েই বাংলা সাহিত্যের পাঠকরা প্রোফেসর শঙ্কু নামের এক বিস্ময়কর চরিত্রের সঙ্গে পরিচিতি হয়ে ওঠে।
২) "কর্ভাস" : সত্যজিৎ রায় রচিত "কর্ভাস" কাহিনিটি ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৯ বঙ্গাব্দ) "আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী" পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে এই কাহিনিটি "শঙ্কুসমগ্র" গ্রন্থে সংকলিত হয়।
৩) "স্বর্ণপর্ণী" : সত্যজিৎ রায় রচিত "স্বর্ণপর্ণী" কাহিনিটি ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে (১৩৯৭ বঙ্গাব্দ) "আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী" পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে "শঙ্কুসমগ্র" গ্রন্থে এই কাহিনিটি সংকলিত হয়।
- আলোচক : সৌম্য মাইতি
- যোগাযোগ : ৬২৯০৩৭৭১৩৪
- S.L.S.T বাংলা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে চাইলে ফোন করে যোগাযোগ করুন আমার ৬২৯০৩৭৭১৩৪ নম্বরে, অথবা আমার WhatssApp-তে ম্যাসেজ করুন ৮৭৬৮৮৩০২৩০ নম্বরে। ধন্যবাদ।
Post a Comment