NEW :
Loading contents...

 বৈষ্ণব পদাবলি ও মধ্যযুগ থেকে ২ নম্বরের প্রশ্নোত্তর 

আমার অনলাইন কোচিং থেকে বৈষ্ণব পদাবলি ও মধ্যযুগ থেকে ১৫টি ২ নম্বরের প্রশ্নোত্তর নিম্নে দেওয়া হল (লিমিটেড শব্দ সংখ্যা : ৫০) :-

১) চণ্ডীদাসের পদাবলির জনপ্রিয়তার কারণ কী?

★উত্তর - (ক) প্রেমকে নিত্যনব উপলব্ধিতে পেতে হলে যে দীর্ঘ নিরবচ্ছিন্ন সাধনার প্রয়োজন, তা চণ্ডীদাসের পদে লক্ষণীয়।

(খ) চণ্ডীদাস ভাবতন্ময় আত্মনিষ্ঠ ও মরমিয়া কবি। তাঁর কাব্যের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল পরকীয়া প্রেম।

(গ) চণ্ডীদাসের বর্ণিত প্রেম তত্ত্বসম্মত। তাঁর প্রেমে রয়েছে গোপনীয়তা -- "গোপন পিরিতি / গোপনে রাখিবি।"

(ঘ) চণ্ডীদাসের রাধার প্রেম আধ্যাত্মিক, সে প্রেমে পরিশীলিত হৃদয়কথা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

২) বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যে গোবিন্দদাসের অবদান আলোচনা করুন। / বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যে গোবিন্দদাসের শ্রেষ্ঠত্বের কারণগুলি লিখুন।

★উত্তর - (ক) তাঁর কবিতায় অসাধারণ শিল্পশোভন পদলালিত্য ও ছন্দের দোলায়িত লীলা পরিলক্ষিত হয়।

(খ) গোবিন্দদাস রূপদক্ষ কবি। ধ্বনিমাধুর্য, চিত্রকল্প এবং নাটকীয়তা সৃজনে তিনি অসাধারণ।

(গ) তিনি তাঁর পদে মার্জিত ভাষা ও সার্থক শব্দচয়ন এবং ব্রজবুলি ভাষার অপূর্ব নির্মাণ করেছেন।

(ঘ) তিনি তাঁর কবিতায় নাটকীয়তা ও চিত্রধর্মীতা, দার্শনিকতা ও তাত্ত্বিকতার অসাধারণ সমন্বয় বা মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন।

৩) গোবিন্দদাসের কবিপ্রতিভার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লিখুন।

★উত্তর - (ক) গোবিন্দদাসের গাম্ভীর্য, পাণ্ডিত্য, তত্ত্বচিন্তা একেবারেই তাঁর নিজস্ব। ভাব গভীরতায় তাঁর স্বাতন্ত্র্য চিহ্নিত।

(খ) গোবিন্দদাস ছিলেন সৌন্দর্যচেতনার কবি। তিনি রূপদক্ষ। ভাষা, ছন্দ ও অলংকার নিয়ে তিনি নিরন্তর পরীক্ষা করেছেন।

(গ) তাঁর পদের মধ্যে রয়েছে সংগীতপ্রবণতা, সেই সঙ্গে নাটকীয়তা।

(ঘ) গোবিন্দদাস রাধাকৃষ্ণ লীলার বিভিন্ন পর্যায় নিয়ে পদ রচনা করেছেন। তিনি রূপানুরাগের পদে শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দিয়েছেন।

৪) গোবিন্দদাসের কবিপ্রতিভার মৌলিকতা কোথায়?

★উত্তর - (ক) ভাষা, চিত্রকল্প এবং ধ্বনিঝংকারে তাঁর কবিদৃষ্টির স্বাতন্ত্র্য রয়েছে।

(খ) গোবিন্দদাস নিছক অনুকারক নন, মৌলিক স্রষ্টাও বটে।

(গ) সংগীতধর্মিতা, বাক্-নির্মিতির পারঙ্গমতায় তিনি গুরুকে অতিক্রম করেছেন।

(ঘ) "All arts aspire to the condition of music" -- এই সূত্রে গোবিন্দদাসের কাব্যে আশ্চর্যসুন্দর রূপ লাভ করেছে।

৫) শ্রীনিবাসের শিষ্য কবি বল্লভদাস লিখেছেন, -- "গোবিন্দ দ্বিতীয় বিদ্যাপতি"। তাঁকে এই আখ্যায় ভূষিত করার কারণ কী? / বিদ্যাপতি ও গোবিন্দদাসের কবিপ্রতিভার সাদৃশ্য বা মিল কোথায়?

★উত্তর - (ক) কবি বিদ্যাপতি ও গোবিন্দদাস উভয়েই ছিলেন রূপসচেতন। তাঁরা দু'জনেই কবিতার আঙ্গিক নিয়ে ভেবেছেন।

(খ) পদের লালিত্য, ছন্দের চমৎকারিত্ব ও অলংকারের যথার্থ প্রয়োগ-নৈপুণ্যে কবি গোবিন্দদাস বিদ্যাপতির সার্থক উত্তরসূরি।

(গ) ব্রজবুলি ভাষার যথাযথ বিন্যাস কৌশলে বিদ্যাপতি ও গোবিন্দদাস দু'জনেই সফল। তাই গোবিন্দদাস চিহ্নিত হয়েছেন "দ্বিতীয় বিদ্যাপতি" নামে।

৬) বিদ্যাপতি ও গোবিন্দদাসের কবিপ্রতিভার দু'টি বৈসাদৃশ্য বা পার্থক্য উল্লেখ করুন।

★উত্তর - (ক) বিদ্যাপতি জীবনবাসনায় যতখানি চঞ্চল, ঠিক বিপরীতে গোবিন্দদাস প্রগাঢ় ভক্তি-নিষ্ঠায় অবিচল।

(খ) কবিতার কারুকৃতিতে দু'জনেই তুল্যমূল্য হলেও বিদ্যাপতি যেখানে কামনার রঙ ছড়িয়ে দেন, লৌকিক প্রেমের কথা শোনান; গোবিন্দদাস তার বিপরীতে সাধনমার্গের অন্য আর এক চিরন্তন প্রেমের কাহিনি শোনান।

৭) প্রাক্-চৈতন্য ও উত্তর-চৈতন্য বৈষ্ণব পদাবলির পার্থক্য সংক্ষেপে আলোচনা করুন।

★উত্তর - (ক) মর্ত্যপ্রেমের আধারে রাধাকৃষ্ণ লীলাকে তত্ত্বের আলোকে পরিবেশন করা হয়েছে। অথচ প্রাক্-চৈতন্যযুগে তত্ত্ব অপেক্ষা প্রাধান্য পেয়েছিল লৌকিক প্রেমকথা।

(খ) উত্তর-চৈতন্যযুগে পঞ্চরসের পরিবর্তে মধুর বা শৃঙ্গার রসের প্রাধান্য স্বীকৃত হয়েছিল।

(গ) প্রাক্-চৈতন্যযুগের পদে ধরা পড়েছিল কামনার প্রগাঢ়তা, উত্তর-চৈতন্যযুগে পাওয়া গেল আধ্যাত্মিক প্রেমের স্বর্গীয় সুষমা।

৮) "ধর্মমঙ্গল" কাব্যধারার শ্রেষ্ঠ কবি ঘনরাম চক্রবর্তীর কবিকৃতিত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখুন। / ঘনরাম চক্রবর্তীর "ধর্মমঙ্গল" কাব্যের স্বাতন্ত্র্যতা কোথায়?

★উত্তর - (ক) ঘনরাম আঞ্চলিক কাব্য "ধর্মমঙ্গল"কে পাণ্ডিত্যে, মেধায়, অলংকরণে মধ্যযুগের অনবদ্য শিল্পসম্ভারে রূপদান করেছেন।

(খ) "ধর্মমঙ্গল" কাব্য বীররসাত্মক। প্রাচীন ডোম সৈন্যদের বীরত্বকথা এ কাব্যের বিশেষত্বের অন্যতম দিক।

(গ) ঘনরামের কাব্যে রাঢ়বঙ্গের ইতিহাস, ভূগোল, সমাজতত্ত্ব, লোকসংস্কৃতির বহু প্রামাণিক তথ্য পাওয়া যায়।

(ঘ) ঘনরামের শব্দনির্মাণ কৌশল বুদ্ধিদীপ্ত, তাঁর বাণী অলংকারের বন্ধনে পরিশীলিত।

৯) জীবনী কাব্য হিসেবে কৃষ্ণদাস কবিরাজের "শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত"-এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব লিখুন।

★উত্তর - (ক) অচিন্ত্য ভেদাভেদ তত্ত্ব, কৃষ্ণতত্ত্ব, রাধাতত্ত্ব, গোপী তত্ত্ব, সাধ্য-সাধনতত্ত্ব ইত্যাদি তত্ত্বনিষ্ঠার প্রসঙ্গ এই কাব্যে স্থান পেয়েছে।

(খ) কৃষ্ণদাস এই কাব্যে ঐতিহাসিক নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন। তাই এই কাব্যের মধ্যে অলৌকিকতা ও অতিলৌকিকতা অনেক সময় চোখে পড়েছে।

(গ) "মুরারী গুপ্তের কড়চা", কবি কর্ণপুরের গ্রন্থ, "স্বরূপ দামোদরের কড়চা" ইত্যাদি গ্রন্থ থেকে তিনি ঋণ গ্রহণ করেছেন।

১০) কৃষ্ণদাস কবিরাজের "শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত" কাব্যের শ্রেষ্ঠত্বের কারণগুলি উল্লেখ করুন।

★উত্তর - (ক) চৈতন্যজীবনী বিষয়ক গ্রন্থগুলির মধ্যে কৃষ্ণদাসের "শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত" শ্রেষ্ঠ। এই কাব্যটি বিষয় বৈচিত্র্যে, সংকলনে, কবিত্বময় ভাষায় অপূর্ব।

(খ) চৈতন্যতত্ত্ব ও চৈতন্যপ্রচারিত ধর্মের পূর্ণ পরিচয় পাওয়া যায় এই কাব্যে।

(গ) দার্শনিক তত্ত্বে এই কাব্যটি সমৃদ্ধ। এই কাব্যে রাধার প্রেমকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে প্রতিপন্ন করা হয়েছে।

(ঘ) শ্রীচৈতন্যদেবের অবতার তত্ত্ব ও লীলারহস্য উদ্‌ঘাটনে এই কাব্যের বিকল্প নেই।

১১) রামপ্রসাদ সেনের কবিপ্রতিভার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।

★উত্তর - (ক) রামপ্রসাদ ছিলেন 'সকল রসের রসিক, প্রেমিক, ভাবুক ও ভক্ত এবং জ্ঞানী'।

(খ) তিনি তাঁর কাব্যে উপাচার-বর্জিত উপাসনার কথা বলেছেন।

(গ) তিনি তাঁর পদে মানুষের প্রতি অকুণ্ঠ ভালবাসার কথা বলেছেন।

(ঘ) রামপ্রসাদ তাঁর কাব্যে সামাজিক অসঙ্গতির সত্যনিষ্ঠ চিত্র উপস্থাপন করেছেন।

(ঙ) তিনি তাঁর পদে সহজকথা সহজসুরে বলেছেন।

১২) ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের "অন্নদামঙ্গল" কাব্যকে "নূতন মঙ্গল" বলা হয় কেন?

★উত্তর - (ক) এই কাব্যের চরিত্র নির্মাণে ভারতচন্দ্র প্রচলিত দেব-মাহাত্ম্যের ভাবনা থেকে সরে এসেছেন। 

(খ) বীররস বা করুণরসের পরিবর্তে তিনি এই কাব্যে প্রসন্ন হাস্যরসকে উপস্থাপন করেছেন।

(গ) "অন্নদামঙ্গল" কাব্যে পুরাতন যুগের অন্তঃসারশূন্যতাকে কবি প্রচণ্ড আঘাত হেনেছেন।

(ঘ) এই কাব্যে বাস্তববোধ, সমাজচেতনা, অসংগতির চমকপ্রদ উজ্জ্বলতা, শাণিত বাগ্‌ভঙ্গি, শব্দ নির্মাণ, ভাষার চমৎকারিত্ব প্রতিপাদন, ছন্দের যথাযথ নির্মাণ ঘটেছে।

১৩) ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের কাব্যের দু'টি বৈশিষ্ট্য লিখুন।

★উত্তর - (ক) মধ্যযুগীয় মঙ্গলকাব্যের বিশেষ কাঠামো অনুসরণ করে ভারতচন্দ্র কাব্য রচনা করলেও তাঁর ভাবধারা সম্পূর্ণ নতুন।

(খ) দেবলীলার পটভূমিকায় কবি মানুষের কাহিনিই মুখ্যত বিবৃত করেছেন। তাঁর কাব্যে দেবচরিত্রের মহিমা অপেক্ষা মনুষ্যচরিত্রই অধিকতর সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।

১৪) শাক্তপদাবলির ক্ষেত্রে ভক্তের আকুতির বিশেষত্ব কোথায়?

★উত্তর - ভক্তের আকুতি পর্যায়ের পদগুলির মধ্যে জননী যেন তার স্নেহবাৎসল্যে সন্তানের সমস্তরকমের কষ্ট-যন্ত্রণা, ব্যর্থতা-গ্লানি ধুয়ে দেন। সুতরাং এই পদগুলি একদিকে আন্তরিকতায় পূর্ণ, অন্যদিকে তত্ত্বে নিপুণ। ভক্তির সঙ্গে তত্ত্বের মেশামিশিতেই ভক্তের আকুতির শ্রেষ্ঠ।

১৫) কবিগানের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।

★উত্তর - (ক) এসব গানে প্রভূত পরিমাণ অনুপ্রাসের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

(খ) মূলত রাধাকৃষ্ণের লীলাবিষয়ক গান এখানে গাওয়া হত।

(গ) কবিগান মূলত সংগীত এবং সেই সংগীত অবশ্যই ধর্মনিরপেক্ষ আবেগ ও আনন্দের জন্ম দিয়েছিল।

(ঘ) এইসব গানের মধ্যে ভাবের গভীরতা বা অসামান্য কাব্যকলার স্পর্শ না থাকলেও এই গানগুলিকে উপেক্ষা করা যায় না।

(ঙ) কবিগানের লোকরঞ্জন ক্ষমতা অনস্বীকার্য।

  ¤ আরও দেখুন :-  



  • আলোচক : সৌম্য মাইতি
  • যোগাযোগ : ৬২৯০৩৭৭১৩৪
  • S.L.S.T  বাংলা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে চাইলে ফোন করে যোগাযোগ করুন আমার ৬২৯০৩৭৭১৩৪ নম্বরে, অথবা আমার WhatssApp-তে ম্যাসেজ করুন ৮৭৬৮৮৩০২৩০ নম্বরে। এখানে উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর মতো সঠিক তথ্যসহকারে ১ নম্বরের পাশাপাশি ২ নম্বরের ডেসক্রিপটিভ প্রশ্নোত্তরও করানো হয়। ধন্যবাদ।

This is a premium content, you can continue reading this content in our Android App. Click the button below to continue. alert-info

Post a Comment

Previous Post Next Post