NEW :
Loading contents...

আমাদের বই থেকে কিছু ডেসক্রিপটিভ প্রশ্নোত্তর

আমাদের তিনজনের সম্পাদিত 'বাংলা সাহিত্যিক চরিতমালা' (আধুনিক যুগ : প্রথম খণ্ড) বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণ (মাত্র ৫০০ কপি) ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত হবে। তাই যারা এই ৫০০ জনের মধ্যে বই পেতে চান, আপনারা আগে থেকেই প্রি-বুকিং করে রাখুন। বইটি সম্পর্কে বিশদে জানতে এবং প্রি-বুকিং করতে আমার ৬২৯০৩৭৭১৩৪ নম্বরে ফোন করে যোগাযোগ করুন, অথবা আমার ৮৭৬৮৮৩০২৩০ WhatsApp নম্বরে নিজের নামসহ ম্যাসেজ করুন। নিম্নে আমাদের সম্পাদিত বইটি থেকে ১০টি ২ নম্বরের (লিমিটেড শব্দ সংখ্যা-৫০) গুরুত্বপূর্ণ ডেসক্রিপটিভ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হল ---

১) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'কমলাকান্তের দপ্তর' (১৮৭৫) প্রবন্ধগ্রন্থকে 'ব্যক্তিগত প্রবন্ধগ্রন্থ' বলার কারণ কী?

★উত্তর - এই প্রবন্ধগ্রন্থ তথ্য, তত্ত্ব, যুক্তির ভাবে ভারাক্রান্ত নয়, প্রাবন্ধিক বঙ্কিমচন্দ্রের ব্যক্তিহৃদয় এখানে প্রধান। তাঁর চিন্তাশীলতা, মনদ্বিতা, ব্যক্তিগত আবেগ ও অনুভূতির রসে সিক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে এই প্রবন্ধগ্রন্থে। জীবনের তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ, সমালোচনার বিশিষ্ট ভঙ্গি বিশুদ্ধ হাস্যের আলোয় এখানে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। তাই এই প্রবন্ধগ্রন্থটিকে 'ব্যক্তিগত প্রবন্ধগ্রন্থ' বলা হয়।

২) বাংলা কাব্যসাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিহারীলাল চক্রবর্তীকে 'ভোরের পাখি' বলে অভিহিত করেছেন কেন?

★উত্তর - কারণ বিহারীলালই বাংলা সাহিত্যে প্রথম ব্যক্তির আত্মলীনতা, ব্যক্তিগত অনুভূতি, গীতোচ্ছ্বাস সহযোগে কবিতা রচনা করে বাংলা কবিতাকে এক ভিন্নমাত্রা দান করেছেন। তাঁর কবিতা একেবারে অভিনব - যথার্থভাবেই কবির ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের আত্মপ্রকাশ। ভোরের পাখির গান যেমন আত্মগত এবং তারা যেমন কলকাকলিতে অন্যান্য পাখির ঘুম ভাঙিয়ে থাকে, বাংলা কাব্যসাহিত্যে বিহারীলালের ভূমিকা সেরকম বলে রবীন্দ্রনাথের বিশ্বাস।

৩) যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তকে 'দুঃখবাদী কবি' বলে অভিহিত করা হয় কেন?

★উত্তর - কারণ যতীন্দ্রনাথের কাব্য বা কবিতার মূল সুরই হল দুঃখ ও কষ্ট। তাঁর কাছে প্রেম, প্রকৃতি, নারী সবই ফাঁকি। আধুনিক সময়ের জটিলতা, যুগযন্ত্রণা থেকে মানুষের মধ্যে তৈরি হয় গভীর হতাশার বোধ। আনন্দ বা আশা নয়, মানুষের জীবনের মর্মে রয়েছে দুঃখ ও নিরাশা। তাঁর বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থের নামকরণ থেকেও এ কথার সাক্ষ্য মিলবে।

৪) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'চোখের বালি' (১৯০৩/১৩০৯) উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র 'বিনোদিনী'কে আপনার ভালো লাগে কেন?

★উত্তর - কারণ রবীন্দ্রনাথ 'বিনোদিনী' চরিত্রটি অতি যত্নে গড়ে তুলেছেন এবং এই চরিত্রের মধ্য দিয়ে শিল্পীর চরিত্র নির্মাণের নিপুণ কৌশল, এক অতৃপ্ত ও চির আকাঙ্ক্ষিত শাশ্বত প্রেম তৃষ্ণাকে প্রস্ফুটিত করে তুলেছেন। যা তার অপূর্ণ থেকে গেছে। গভীর মননের 'বিনোদিনী'র ছিল স্বাধীন এবং সংস্কারমুক্ত বোধ। রবীন্দ্রনাথ যার মাধ্যমে হৃদয় খুঁড়ে মনস্তত্ত্ব বের করেছেন।

৫) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'গোরা' (১৯১০/১৩১৬) উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র 'গোরা'কে আপনার ভালো লাগে কেন?

★উত্তর - কারণ রবীন্দ্রনাথ 'গোরা' চরিত্রটিকে একজন নির্ভেজাল দেশপ্রেমিকরূপে গড়ে তুলেছেন। সে ছিল একজন আইরিশম্যানের পুত্র। একজন নিষ্ঠাবান হিন্দু হিসেবেই সে একজন ইংরেজ বিদ্বেষী, খ্রিস্টান ধর্মবিরোধী হয়ে ওঠে। সর্বোপরি 'গোরা' চরিত্রের বক্তব্য ও কার্যকলাপের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ সমাজের অন্দরে বাসা বাঁধা সংকীর্ণতা, উগ্র জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে গঠনমূলক ও সমন্বয়বাদী জাতীয়তাবাদের কথা এই উপন্যাসে বলেছেন।

৬) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পদ্মা নদীর মাঝি' (১৯৩৬/১৩৪৩) উপন্যাসকে সার্থক 'আঞ্চলিক উপন্যাস' বলা হয় কেন?

★উত্তর - (ক) পদ্মা নদীর তীর সংলগ্ন কেতুপুর ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের পদ্মার মাঝি ও জেলেদের জীবনকাহিনি, তাদের আচার ও প্রচার, লোকধর্ম, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এই উপন্যাসে প্রাধান্য পেয়েছে।

(খ) এই উপন্যাসে নায়কোপম চরিত্র থাকলেও প্রভূত অর্থে নায়ক নেই। এখানে নায়ক হয়ে উঠেছে জনগোষ্ঠী অথবা প্রকৃতি।

(গ) আঞ্চলিক জীবনকথাকে অবলম্বন করলেও এই উপন্যাসে শাশ্বত জীবনধর্মের প্রকাশ ঘটেছে।

৭) বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পথের পাঁচালী' (১৯২৯/১৩৩৬) উপন্যাসকে 'আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস' বলা হয় কেন?

★উত্তর - (ক) এই উপন্যাসে বিভূতিভূষণের ব্যক্তিগত বহু ছবি অর্থাৎ তাঁর নিজের পরিবার তথা সংসারের বহু ঘটনার বিষয়ের অভ্যাস ফুটে উঠেছে।

(খ) এই উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র 'অপু'র পারিবারিক ছবি ও বাস্তব উপস্থিতির ক্ষেত্রটি এখানে বর্ণিত হয়েছে।

(গ) "পথের পাঁচালী" উপন্যাসটি উত্তম পুরুষ সর্বনামে রচিত।

(ঘ) এই উপন্যাসে আদ্যান্তযুক্ত কোনো প্লট নেই।

৮) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'পথের দাবী' (১৯২৬) উপন্যাসের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লিখুন।

★উত্তর - (ক) পরাধীন জাতির মর্মবেদনা ও বিপ্লববাদের মূলতত্ত্ব এই উপন্যাসের প্রধান বর্ণনার বিষয়।

(খ) এখানে রাজনৈতিক স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দাবিও আছে, আছে সামাজিক মুক্তির কথাও।

(গ) নরনারীর হৃদয়ধর্মের গভীর প্রকাশ এই উপন্যাসে লক্ষ্য করা যায়। 

(ঘ) ভারতীয় বিপ্লব সাধনার এক বিশাল মহিমান্বিত রূপায়ণ এই উপন্যাসকে অনন্য করে তুলেছে।

৯) কাজী নজরুল ইসলামের 'অগ্নিবীণা' (১৯২২/১৩২৯) কাব্যগ্রন্থের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।

★উত্তর - (ক) এই কাব্যগ্রন্থে ধ্বনিত হয়েছে স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্র, প্রতিবাদের সুর, বিপ্লবের বিদ্রোহ।

(খ) এর প্রতিটি কবিতাতে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ রয়েছে, এমনকি নামকরণেও রয়েছে অগ্নির তাপ।

(গ) এই কাব্যগ্রন্থের শ্রেষ্ঠ কবিতা 'বিদ্রোহী'র প্রতিটি চরণ তৎকালীন পরাধীন ভারতবর্ষের তরুণ সমাজকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

(ঘ) এই কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলির বাণী বুলেটের মতো তীব্র ও তীক্ষ্ণ।

১০) সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কাব্যগ্রন্থে বা কবিতায় শব্দ প্রয়োগের বিপরীতধর্মিতার কারণ কী?

★উত্তর - এ প্রসঙ্গে বুদ্ধদেব বসু তাঁর দু'টি প্রবণতাকে চিহ্নিত করেছেন। 'গণকবি' হওয়ার বাসনা হয়তো সুভাষের সহজবোধ্য কবিতা রচনার কারণ। অন্যদিকে দুর্বোধ্য শব্দ ব্যবহার করে তিনি কলাকৈবল্যবাদীদের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করতে সচেষ্ট ছিলেন। নিজের কবিপ্রতিভার প্রমাণ দিয়ে প্রাজ্ঞজনের স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টায় তিনি হয়ত দুর্বোধ্য শব্দ, জটিল প্রতীক, রূপকসহ নানা কাব্যিক অনুষঙ্গ ব্যবহার করেছেন।

 ¤ তথ্যঋণ :-  'বাংলা সাহিত্যিক চরিতমালা' (আধুনিক যুগ : প্রথম খণ্ড)

★সম্পাদনা (সম্পাদক) :- সৌম্যদীপ মাইতি, সাজিদুল মণ্ডল ও সপ্তদীপ ঘোষ।


  • আলোচক : সৌম্য মাইতি
  • যোগাযোগ : ৬২৯০৩৭৭১৩৪
  • S.L.S.T  বাংলা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে চাইলে ফোন করে যোগাযোগ করুন আমার ৬২৯০৩৭৭১৩৪ নম্বরে, অথবা আমার WhatssApp-তে ম্যাসেজ করুন ৮৭৬৮৮৩০২৩০ নম্বরে। এখানে উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর মতো সঠিক তথ্যসহকারে ১ নম্বরের পাশাপাশি ২ নম্বরের ডেসক্রিপটিভ প্রশ্নোত্তরও করানো হয়। ধন্যবাদ।

This is a premium content, you can continue reading this content in our Android App. Click the button below to continue. alert-info

Post a Comment

Previous Post Next Post