"জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" : কিছুটা ভিন্ন স্বাদের তথ্য
"জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার। "দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া" ("The Times of India") পত্রিকার প্রকাশক সাহু জৈন পরিবার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত "অছি পরিষদ" ভারতীয় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"টি প্রদান করে থাকে।
¤ "জ্ঞানপীঠ" শব্দের অর্থ :-
"জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"-এর "জ্ঞানপীঠ" শব্দের সংস্কৃত ভাষায় অর্থ হল :- "জ্ঞানের বেদি"।
¤ "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"-এর নগদ অর্থমূল্য :-
"জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"-এর নগদ অর্থমূল্য হল :- সাত লক্ষ টাকা। এর সঙ্গে জ্ঞান, শিল্পকলা ও সঙ্গীতের দেবী সরস্বতীর একটি প্রতিমূর্তি এবং একটি মানপত্র দেওয়া হয়।
¤ "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"-এর যোগ্য বিবেচনা(নির্বাচন) :-
যে কোন ভারতীয় নাগরিক, যিনি ভারতের কোনো একটি সরকারি ভাষায় সাহিত্যচর্চা করেন, তিনিই এই "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"-এর যোগ্য হিসেবে বিবেচিত (নির্বাচিত) হতে পারেন।
¤ "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রদানের কারণ :-
ভারতীয় (বিভিন্ন ধরনের ভাষার) সাহিত্যে অবদানের জন্য। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দের আগে পর্যন্ত কোনো একটি নির্দিষ্ট বইয়ের (গ্রন্থ) জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" দেওয়া হত। কিন্তু তারপর থেকে একটি নির্দিষ্ট বই (গ্রন্থ) ছাড়াও ভারতীয় সাহিত্যে বা সাহিত্য ক্ষেত্রে সারাজীবন (জীবনভর) কৃতিত্ব বা অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হতে থাকে।
¤ "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রচলন :-
১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" চালু বা প্রচলন হয়। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে মালায়লাম ভাষার লেখক জি শঙ্কর কুরুপ "ওডাক্কুঝল" ["Odakkujhal" : "বাঁশি"] (১৯৫০) কাব্যগ্রন্থের জন্য প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন। তাই ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দ থেকেই প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রদান করা হয়েছে বলে প্রচলিত হয়।
¤ সর্বপ্রথম "জ্ঞানপীঠ" পুরস্কৃত (পুরস্কার প্রদান) :- ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে।
¤ সর্বপ্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক :-
১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"-এ সম্মানিত হয়েছেন মালয়ালম সাহিত্য (ভাষা)-এর লেখক জি শঙ্কর কুরুপ "ওডাক্কুঝল" ["Odakkujhal" : "বাঁশি"] (১৯৫০) কাব্যগ্রন্থের জন্য।
¤ সর্বশেষ "জ্ঞানপীঠ" পুরস্কৃত (পুরস্কার প্রদান) :- ২০১৯ সালে।
¤ সর্বশেষ "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক :-
২০১৯ সালে সর্বশেষ "জ্ঞানপীঠ" পুরস্কার"-এ সম্মানিত হয়েছেন মালয়ালাম সাহিত্য (ভাষা)-এর লেখক আক্কিথাম অছুতাম নাম্বুথিরি "অমৃতা খটিকা, নিমিশা ক্ষেত্রম" গ্রন্থের জন্য।
¤ কোন্ ভাষায় কতজন লেখক "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন?
★উত্তর :- হিন্দি ভাষায় সর্বমোট (সবচেয়ে বেশি) ১১ জন, কন্নড় ভাষায় ৮ জন, মালয়ালম ভাষায় ৬ জন, বাংলা ভাষায় ৬ জন, উর্দু ভাষায় ৪ জন, গুজরাতি ভাষায় ৪ জন, ওড়িয়া ভাষায় ৪ জন, মারাঠি ভাষায় ৪ জন, তেলেগু ভাষায় ৩ জন, অসমিয়া ভাষায় ২ জন, তামিল ভাষায় ২ জন, পাঞ্জাবি ভাষায় ২ জন, কাশ্মীরি ভাষায় ১ জন লেখক, কোঙ্কণি ভাষায় ১ জন লেখক, সংস্কৃত ভাষায় ১ জন লেখক এবং ইংরেজি ভাষায় ১ জন লেখক "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
¤ কত বছরে ক'টি ভাষায় কতজন লেখক "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন?
★উত্তর :- ১৯৬৫-২০১৯ সাল পর্যন্ত ৫৫ বছরে মোট ১৬টি ভাষায় সর্বমোট ৬০ জন (৫ জন যুগ্মভাবে) লেখক "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
¤ সবচেয়ে বেশি "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পেয়েছেন :- হিন্দি ভাষার লেখকেরা (১১ বার পান)।
¤ সবচেয়ে কম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পেয়েছেন :-
কাশ্মীরি ভাষার লেখক, কোঙ্কণি ভাষার লেখক, সংস্কৃত ভাষার লেখক ও ইংরেজি ভাষার লেখক (সবাই ১ বার করে পান)।
যুগ্মভাবে "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পেয়েছেন যাঁরা
★১) ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে :-
ক) কন্নড় ভাষার লেখক কুপ্পল্লি ভেঙ্কটপ্পাগৌড়া পুত্তপ্পা : "শ্রী রামায়ণ দর্শনম" ["Sri Ramayana Darshanam"] {১ম খণ্ড (Volume-1) : ১৯৪৯ ও ২য় খণ্ড (Volume-2) : ১৯৫৭} আধুনিক মহাকাব্যের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
খ) গুজরাতি ভাষার লেখক উমাশঙ্কর যোশী : "নিশীথা" ["Nishitha"] গ্রন্থের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
★২) ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে :-
ক) কন্নড় ভাষার লেখক দত্তাত্রেয় রামচন্দ্র বেন্দ্রে : "নাকুতান্তি" ["Naku Tanti"] (১৯৬৪) কাব্য-সংকলন গ্রন্থের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
খ) ওড়িয়া ভাষার লেখক গোপীনাথ মোহান্তি : "মাটিমাতাল" ["Mati Matal"] (১৯৬৪) মহাকাব্য জাতীয় গদ্যরচনা (গদ্যগ্রন্থ/প্রবন্ধগ্রন্থ)-র জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
★৩) ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে :-
ক) হিন্দি ভাষার লেখক নির্মল বর্মা : ভারতীয় (হিন্দি) সাহিত্যে অবদানের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
খ) পাঞ্জাবি ভাষার লেখক গুরদয়াল সিং : ভারতীয় (পাঞ্জাবি) সাহিত্যে অবদানের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
★৪) ২০০৬ সালে :-
ক) কোঙ্কণি ভাষার লেখক রবীন্দ্র কেলেকর : ভারতীয় (কোঙ্কণি) সাহিত্যে অবদানের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
খ) সংস্কৃত ভাষার লেখক সত্যব্রত শাস্ত্রী : ভারতীয় (সংস্কৃত) সাহিত্যে অবদানের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
★৫) ২০০৯ সালে :-
ক) হিন্দি ভাষার লেখক অমর কন্ট : ভারতীয় (হিন্দি) সাহিত্যে অবদানের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
খ) হিন্দি ভাষার লেখক শ্রীলাল শুক্লা : ভারতীয় (হিন্দি) সাহিত্যে অবদানের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
১৬টি ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার''প্রাপ্ত প্রথম লেখক
১) মালয়ালম ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে : মালায়লাম ভাষার লেখক জি শঙ্কর কুরুপ "ওডাক্কুঝল" ["Odakkujhal" : "বাঁশি"] (১৯৫০) কাব্যগ্রন্থের জন্য মালয়ালম ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
২) বাংলা ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে : বাংলা ভাষার লেখক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় "গণদেবতা" ["Ganadebata"] (১৯৪২) মহাকাব্যিক পটভূমির উপন্যাসের জন্য বাংলা ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
৩) কন্নড় ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে : কন্নড় ভাষার লেখক কুপ্পল্লি ভেঙ্কটপ্পাগৌড়া পুত্তপ্পা "শ্রী রামায়ণ দর্শনম" ["Sri Ramayana Darshanama"] {১ম খণ্ড (Volume-1) : ১৯৪৯ ও ২য় খণ্ড (Volume-2) : ১৯৫৭} আধুনিক মহাকাব্যের জন্য কন্নড় ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
৪) গুজরাতি ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে : গুজরাতি ভাষার লেখক উমাশঙ্কর যোশী "নিশীথা" ["Nishitha"] গ্রন্থের জন্য গুজরাতি ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
৫) হিন্দি ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে : হিন্দি ভাষার লেখক সুমিত্রানন্দন পন্ত "চিদাম্বরা" ["Chidambara"] গ্রন্থের জন্য হিন্দি ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
৬) উর্দু ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে : উর্দু ভাষার লেখক ফিরাক গোরখপুরী "গুল-এ-নগমা" ["Gul-a-Nagma"] গ্রন্থের জন্য উর্দু ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
৭) তেলেগু ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে : তেলেগু ভাষার লেখক বিশ্বনাথ সত্যনারায়ণ "রামায়ণ কল্পবৃক্ষমু" ["Ramayana Kalpavrikshamu"] গ্রন্থের জন্য তেলেগু ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
৮) ওড়িয়া ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে : ওড়িয়া ভাষার লেখক গোপীনাথ মোহান্তি "মাটিমাতাল" ["Mati Matal"] (১৯৬৪) মহাকাব্য জাতীয় গদ্যরচনা (গদ্যগ্রন্থ/প্রবন্ধগ্রন্থ)-র জন্য ওড়িয়া ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
৯) মারাঠি ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে : মারাঠি ভাষার লেখক বিষ্ণু সখারাম খান্দেকর "যযাতি" ["Jajati"] গ্রন্থের জন্য মারাঠি ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
১০) তামিল ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে : তামিল ভাষার লেখক আকিলান "চিত্রাপ্পাবাই" ["Chitrappabai"] গ্রন্থের জন্য তামিল ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
১১) অসমিয়া ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে : অসমিয়া ভাষার লেখক বীরেন্দ্র কুমার ভট্টাচার্য "মৃত্যুঞ্জয়" ["Mrityunjaya"] গ্রন্থের জন্য অসমিয়া ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
১২) পাঞ্জাবি ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে : পাঞ্জাবি ভাষার লেখক অমৃতা প্রীতম সিং "কাগজ তে ক্যানভাস" ["Kagaz Te
Kanvas" {"The Paper and The Canvas"}] (১৯৮১) উপন্যাসের জন্য পাঞ্জাবি ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
১৩) কাশ্মীরি ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★২০০৪ সালে : কাশ্মীরি ভাষার লেখক রহমান রাহি "সভুক সোডা, কালামি রাহি ও সিয়া রোদে জারেন মাঞ্জ" ["Savuk Soda, Kalami Rahi o Sia Rode Jaren Manj"] গ্রন্থের জন্য কাশ্মীরি ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
★তথ্য :- কাশ্মীরি ভাষায় মাত্র ১ জন লেখকই "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
১৪) কোঙ্কণি ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★২০০৬ সালে : কোঙ্কণি ভাষার লেখক রবীন্দ্র কেলেকর ভারতীয় (কোঙ্কণি) সাহিত্যে অবদানের জন্য কোঙ্কণি ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
★তথ্য :- কোঙ্কণি ভাষায় মাত্র ১ জন লেখকই "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
১৫) সংস্কৃত ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★২০০৬ সালে : সংস্কৃত ভাষার লেখক সত্যব্রত শাস্ত্রী ভারতীয় (সংস্কৃত) সাহিত্যে অবদানের জন্য সংস্কৃত ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
★তথ্য :- সংস্কৃত ভাষায় মাত্র ১ জন লেখকই "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
১৬) ইংরেজি ভাষায় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপ্ত প্রথম লেখক :-
★২০১৮ সালে : ইংরেজি ভাষার লেখক অমিতাভ ঘোষ ভারতীয় (ইংরেজি) সাহিত্যে অবদানের জন্য ইংরেজি ভাষায় প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
★তথ্য :- ইংরেজি ভাষায় মাত্র ১ জন লেখকই "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
কয়েকটি উল্লেখযোগ্য তথ্যাদি
১) ২০০৫ ও ২০০৬ সালের "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" ২০০৮ সালের ২২শে নভেম্বর ঘোষিত হয়েছিল।
২) ২০০৫ সালে হিন্দি ভাষার লেখক কুঁয়ার নারায়ণ ভারতীয় (হিন্দি) সাহিত্যে অবদানের জন্য "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান।
৩) ২০০৬ সালে কোঙ্কণি ভাষার লেখক রবীন্দ্র কেলেকর ভারতীয় (কোঙ্কণি) সাহিত্যে অবদানের জন্য এবং সংস্কৃত ভাষার লেখক (পণ্ডিত) সত্যব্রত শাস্ত্রী ভারতীয় (সংস্কৃত) সাহিত্যে অবদানের জন্য যুগ্মভাবে "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" পান। এই সত্যব্রত শাস্ত্রী হলেন প্রথম "জ্ঞানপীঠ" পুরস্কার-জয়ী সংস্কৃত ভাষার লেখক।
৪) ২০১৭ সালে "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"-এ সম্মানিত হয়েছেন হিন্দি সাহিত্য (ভাষা)-র লেখক কৃষ্ণা সোবতি (Krishna Sobti) ভারতীয় (হিন্দি) সাহিত্যে অবদানের জন্য।
বাংলা সাহিত্যে "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপকগণ
১) ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে : কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় "গণদেবতা" (অক্টোবর, ১৯৪২) {এটি তাঁর ত্রয়ী বা ট্রিলজি উপন্যাসের প্রথম উপন্যাস। এই উপন্যাসটির বিষয়বস্তু : বিভাগোত্তর ভারতবর্ষের সমাজ ব্যবস্থা এবং স্বাধীনতা আন্দোলন ও শিল্পায়নের পরিপ্রেক্ষিত গ্রামীণ সমাজের বিবর্তন।} মহাকাব্যিক পটভূমির উপন্যাসের জন্য ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
★তথ্য :- কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেলেন। এছাড়া তাঁর "গণদেবতা" (অক্টোবর, ১৯৪২) {এটি তাঁর ত্রয়ী বা ট্রিলজি উপন্যাসের প্রথম খণ্ড। এই উপন্যাসটির বিষয়বস্তু : বিভাগোত্তর ভারতবর্ষের সমাজ ব্যবস্থা এবং স্বাধীনতা আন্দোলন ও শিল্পায়নের পরিপ্রেক্ষিত গ্রামীণ সমাজের বিবর্তন।} মহাকাব্যিক পটভূমির উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত উপন্যাস হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেল।
২) ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে : কবি বিষ্ণু দে "স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যত" (১৯৬৩/১৩৭০) {এই কাব্যগ্রন্থে আশাহীন যান্ত্রিক জীবনের ভয়ঙ্কর চিত্র পরিস্ফুট হয়েছে।} কাব্যগ্রন্থের জন্য ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
★তথ্য :- কবি বিষ্ণু দে বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর দ্বিতীয় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেলেন। এছাড়া তাঁর "স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যত" (১৯৬৩/১৩৭০) {এই কাব্যগ্রন্থে আশাহীন যান্ত্রিক জীবনের ভয়ঙ্কর চিত্র পরিস্ফুট হয়েছে।} কাব্যগ্রন্থটি বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর দ্বিতীয় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত উপন্যাস হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেল।
৩) ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে : কথাসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী "প্রথম প্রতিশ্রুতি" (১৯৬৪/১৩৭১) [তাঁর ত্রয়ী বা ট্রিলজি উপন্যাসের প্রথম উপন্যাস] উপন্যাসের জন্য ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
★তথ্য :- কথাসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর তৃতীয় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেলেন। এছাড়া তাঁর "প্রথম প্রতিশ্রুতি" (১৯৬৪/১৩৭১) {তাঁর ত্রয়ী বা ট্রিলজি উপন্যাসের প্রথম খণ্ড} উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-র তৃতীয় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত উপন্যাস হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেল।
কিন্তু কথাসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী প্রথম বাঙালি মহিলা সাহিত্যিক হিসেবে বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর প্রথম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে সৌভাগ্য অর্জন করেন। এছাড়া তাঁর "প্রথম প্রতিশ্রুতি" (১৯৬৪/১৩৭১) {তাঁর ত্রয়ী বা ট্রিলজি উপন্যাসের প্রথম উপন্যাস} উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর প্রথম বাঙালি মহিলা সাহিত্যিক কৃত (রচিত) "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত উপন্যাস হিসেবে সৌভাগ্য অর্জন করল।
৪) ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে : কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ "পদাতিক" (ফেব্রুয়ারি, ১৯৪০/ফাল্গুন, ১৩৪৬)-এর জন্য ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
★তথ্য :- কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর চতুর্থ "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেলেন। এছাড়া তাঁর "পদাতিক" (ফেব্রুয়ারি, ১৯৪০/ফাল্গুন, ১৩৪৬) কাব্যগ্রন্থটি বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর চতুর্থ "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত উপন্যাস হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেল।
কিন্তু কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় বাঙালি পুরুষ সাহিত্যিক হিসেবে বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর তৃতীয় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে বিবেচিত হন। এছাড়া তাঁর "পদাতিক" (ফেব্রুয়ারি, ১৯৪০/ফাল্গুন, ১৩৪৬) কাব্যগ্রন্থটি বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর তৃতীয় বাঙালি পুরুষ সাহিত্যিক কৃত (রচিত) "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত হয়।
৫) ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে : কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী "হাজার চুরাশির মা" (আগস্ট, ১৯৭৪) নকশাল আন্দোলন কেন্দ্রিক রচিত রাজনৈতিক উপন্যাসের জন্য ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন।
★তথ্য :- কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর পঞ্চম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেলেন। এছাড়া তাঁর "হাজার চুরাশির মা" (আগস্ট, ১৯৭৪) নকশাল আন্দোলন কেন্দ্রিক রচিত রাজনৈতিক উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর পঞ্চম "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত উপন্যাস হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেল।
কিন্তু কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী দ্বিতীয় বাঙালি মহিলা সাহিত্যিক হিসেবে বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর দ্বিতীয় "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে সৌভাগ্য অর্জন করেন। এছাড়া তাঁর "হাজার চুরাশির মা" (আগস্ট, ১৯৭৪) নকশাল আন্দোলন কেন্দ্রিক রচিত রাজনৈতিক উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর দ্বিতীয় বাঙালি মহিলা সাহিত্যিক কৃত (রচিত) "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"প্রাপ্ত উপন্যাস হিসেবে সৌভাগ্য অর্জন করল।
৬) ২০১৬ সালে : কবি-সাহিত্যিক, সমালোচক ও অনুবাদক শঙ্খ ঘোষ সারা জীবনব্যাপী ভারতীয় (বাংলা) সাহিত্যে কৃতিত্ব বা অবদানের জন্য ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" লাভ করেন। এই "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার"টি তাঁকে কোনো একটি নির্দিষ্ট রচনা (গ্রন্থ বা বই)-কে উদ্দেশ্য করে দেওয়া হয়নি।
★তথ্য :- কবি-সাহিত্যিক, সমালোচক ও অনুবাদক শঙ্খ ঘোষ বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর ষষ্ঠ "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে গেলেন।
কিন্তু কবি-সাহিত্যিক, সমালোচক ও অনুবাদক শঙ্খ ঘোষ বাঙালি পুরুষ সাহিত্যিক হিসেবে বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর চতুর্থ "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" প্রাপক হিসেবে বিবেচিত হন। দীর্ঘ ২০ বছর পর বাংলা সাহিত্য (ভাষা)-এর কবি-সাহিত্যিক, সমালোচক ও অনুবাদক হিসেবে শঙ্খ ঘোষ [সারা জীবনব্যাপী ভারতীয় (বাংলা) সাহিত্যে কৃতিত্ব বা অবদানের জন্য] ২০১৬ সালে "জ্ঞানপীঠ পুরস্কার" অর্জন করে এক কৃতিত্ব অর্জন করলেন বা নজির গড়লেন।
- আলোচক : সৌম্য মাইতি
- যোগাযোগ : ৬২৯০৩৭৭১৩৪
Post a Comment