NEW :
Loading contents...

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যগ্রন্থের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য

১) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "ছবি ও গান" (১৮৮৪/১২৯০/ফাল্গুন, ১৮০৫ শকাব্দ) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) "প্রভাত সঙ্গীত" কাব্যগ্রন্থে যে কামনা ছিল অব্যক্ত, "ছবি ও গান" কাব্যগ্রন্থে তা স্ফুটমান হয়ে উঠেছে।

২) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কড়ি ও কোমল" (১৭ই নভেম্বর, ১৮৮৬/১২৯৩) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) রবীন্দ্রকাব্যে প্রথম পরিপক্কতার দেখা দিয়েছে তাঁর "কড়ি ও কোমল" কাব্যগ্রন্থে।

(খ) এই কাব্যগ্রন্থে কবির যৌবন-রূপে পিপাসার চরম অভিব্যক্তি ঘটেছে।

৩) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "মানসী" (১৮৯০/১০ই পৌষ, ১২৯৭) কাব্যগ্রন্থের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য :-

★গুরুত্ব :- (ক) এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "ঐশ্বর্য পর্ব (১৮৮৭-১৮৯৯)"-এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ।

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থে নরনারীর দেহ আত্মার লীলা, নিঃসর্গের বিচিত্র সৌন্দর্য, মাধুর্য, স্বদেশ, সমাজ ও জাতীয় জীবন সবকিছুই কবি-চিত্তকে স্পর্শ করেছে। কিন্তু সবকিছুর ভেতরেই যেন কবি-চিত্ত একটু ব্যথায়, বেদনায় ভারাক্রান্ত।

৪) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "সোনার তরী" (২রা জানুয়ারি, ১৮৯৪/১৩০০) কাব্যগ্রন্থের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য :-

★গুরুত্ব :- (ক) ঐশ্বর্য পর্বের শুধু নয়, জন্মমগ্ন রবীন্দ্রসাহিত্যেরই অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ রূপে বিবেচিত হয়ে থাকে তাঁর "সোনার তরী" কাব্যগ্রন্থটি।

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থে বিশেষ ছন্দ ও অলংকারের বৈচিত্র্য  সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়।

৫) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ "চিত্রা" (১৮৯৬/ফাল্গুন, ১৩০২)-র গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য :-

★গুরুত্ব :- (ক) সমালোচকদের মতে, "চিত্রা" কাব্যগ্রন্থটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ তথা বাংলা ও বিশ্বসাহিত্যেরও অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ।

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) বর্হিজগৎ ও অন্তর্জগৎ - এই দুইয়ের নিগূঢ় সমন্বয়ের বাইরের সৌন্দর্যসৃষ্টি এবং অন্তরের সৌন্দর্যানুভূতি এক হয়ে "চিত্রা" কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলিকে চিত্র ও অপরূপ ঐশ্বর্যে অভিব্যক্ত করে সার্থক গীতিকবিতায় রূপায়িত করেছে।

৬) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐশ্বর্য পর্ব (১৮৮৭-১৮৯৯)"-এর শেষ কাব্যগ্রন্থ "চৈতালি" (১৮৯৬/আশ্বিন, ১৩০৩)-র গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য :-

★গুরুত্ব :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "ঐশ্বর্য পর্ব (১৮৮৭-১৮৯৯)"-এর শেষ কাব্যগ্রন্থ। যদিও ঐশ্বর্য পর্বের মূল ধারার সঙ্গে এর কোন বিশেষ যোগ নেই।

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) তাঁর এই কাব্যগ্রন্থে উল্লিখিত গতিপথ এই যে যমকে দাঁড়ানো এটা কিন্তু পশ্চাদ্দিকবর্তিতার একটা গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত।

(খ) "চৈতালি" কাব্যগ্রন্থের প্রায় সব কবিতাতেই কবি সনেটধর্মীয় রীতির ভাবাবেগ ফুটিয়ে তুলেছেন। অর্থাৎ এই কাব্যগ্রন্থের প্রায় সব কবিতাই সনেটধর্মী কবিতা।

৭) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কথা" (১৯০০/১লা মাঘ, ১৩০৬) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থে আমাদের অতীত ইতিহাসের অসংখ্য ছোট ছোট আপাত তুচ্ছ ঘটনা ফুটে উঠেছে।

(খ) "কথা" কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি সব গাথা বা ব্যালাড জাতীয় রচনা।

৮) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কাহিনী" (১৯০০/২৪শে ফাল্গুন, ১৩০৬) নাট্য-কাব্যের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থে ত্যাগ, ক্ষমা, বীরধর্ম, মানব মহত্বের অন্যান্য সব গুন প্রকাশ পেয়েছে।

(খ) "কাহিনী" কাব্যগ্রন্থে আছে কয়েকটি নাট্য কবিতা।

(গ) এই কাব্যগ্রন্থের "গান্ধারীর আবেদন", "কর্ণ-কুন্তী-সংবাদ" প্রভৃতি কবিতাতে কবি প্রচলিত লোকধর্ম, সমাজধর্ম প্রভৃতির বিরুদ্ধে মানবের চিরন্তন সত্য নিত্যধর্মের জয় ঘোষণা করেছেন।

৯) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ক্ষণমুহূর্তের মধ্যে শাশ্বতকালের সন্ধান লাভ করা "ক্ষণিকা" (২৬শে জুলাই, ১৯০০/১৩০৭) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থে কবি ভাষা, বাগ, ব্যবহার, মেজাজ - এই বিষয়গুলিতে যেন একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছেন।

(খ) এতকাল কবির ভাষা-ব্যবহারে যেন একটা কৃত্রিমতা ছিল, কিন্তু এই কাব্যগ্রন্থে এবার তিনি তাঁর নিজস্ব ভাষার সন্ধান পেলেন।

(গ) এই কাব্যগ্রন্থে কবি ক্ষণমুহূর্তের মধ্যে শাশ্বতকালের সন্ধান লাভ করেছেন।

১০) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নৈবেদ্য" (১৯০১/আষাঢ়, ১৩০৮) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থে কবি বলিষ্ঠ মানবিকতাবোধের গভীর পরিচয় দিয়েছেন।

১১) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "খেয়া" (১৯০৬/১৮ই আষাঢ়, ১৩১৩) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থের নামটি সার্থক ও ইঙ্গিতবহ। কারণ নদীর একপার থেকে অন্যপার যেতে খেয়া নৌকার প্রয়োজন হয়। কবিও সৌন্দর্যময় এই রোমান্টিক রূপজগৎ থেকে আধ্যাত্মিক জগতে পাড়ি দিতে চেয়েছেন এই কাব্যগ্রন্থে।

(খ) "খেয়া" কাব্যগ্রন্থটি একটি মিস্টিকধর্মী কাব্যগ্রন্থ।

১২) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "শিশু" (রচনাকাল : ১৯০৩/১৩১০ এবং গ্রন্থাকারে প্রকাশ : ১৯০৯) কাব্যগ্রন্থের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য :-

★গুরুত্ব :- (ক) অল্প সময়ের ব্যবধানে এক কন্যা এবং পুত্রের মৃত্যুতে কবির চিত্তে যে যাতনা বোধের সৃষ্টি করেছিল, তারই বহিঃপ্রকাশ রূপে রচিত হয় "শিশু" কাব্যগ্রন্থটি।

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) "শিশু" কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি নানাদিক দিয়েই বাংলা সাহিত্যে স্মরণীয় কীর্তি। কোন শোকোচ্ছ্বাস নয়, শিশু মনের কল্পনা আর খেয়ালীপনাই এই কাব্যগ্রন্থে প্রাধান্য পেয়েছে।

(খ) "শিশু" কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি ঠিক শিশুদের জন্য রচিত নয়, এগুলি শিশুদের নিয়ে লেখা হয়েছে।

১৩) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "উৎসর্গ" (রচনাকাল : ১৯০৪/১৩১১ এবং গ্রন্থাকারে প্রকাশ : ১৯১৪/১লা বৈশাখ, ১৩২১) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থে রয়েছে ব্যথাতুর মনের প্রতিফলন, কিন্তু আমার বেদনানুভবকে কবি প্রায় সর্বত্র চেষ্টা করেছেন সর্বজন-সংবেদ্য করে তুলতে।

(খ) পরবর্তী "খেয়া" কাব্যগ্রন্থের আগমীনী-রূপেই যেন "উৎসর্গ" কবিচেতনা অতীন্দ্রিয় রহস্য কল্পনার সমীপবর্তী।

(গ) আবার ব্যক্তি বেদনা বিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও "উৎসর্গ" কাব্যগ্রন্থের কোন কোন কবিতায় ভারতচেতনাও যথাযথভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

১৪) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "স্মরণ" (রচনাকাল : ১৯০৩-১৯০৪/১৩০৯-১৩১০ এবং গ্রন্থাকারে প্রকাশ : ২৫শে মে, ১৯১৪/১৩২১) :-

★গুরুত্ব :- (ক) স্ত্রী মৃণালিনীর দেবীর মৃত্যুতে, অর্থাৎ স্ত্রী-বিয়োগের ফলে কবির চিত্তে যে যাতনা বোধের সৃষ্টি করেছিল, তারই বহিঃপ্রকাশ রূপে রচিত হয় "স্মরণ" কাব্যগ্রন্থটি।

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলিতে স্ত্রী চলে যাওয়ার পরই কবি যেন নতুন করে মৃণালিনী দেবীকে আবিষ্কার করেছিলেন।

১৫) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "পলাতকা" (অক্টোবর, ১৯১৮/১৩২৫) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলিতে কবি মুক্তক ছন্দ ব্যবহার করেছেন।

(খ) এখানে ছন্দ একেবারে অলঙ্কৃত, সরল ও অনাড়ম্বর-এর বাগ-বিন্যাস এবং বেশ ঘরোয়া ধরনের গল্প বলার মতো করে এই কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি রচিত‌।

(গ) এই কাব্যগ্রন্থের অধিকাংশ কবিতাগুলিতেই কোন না কোন সাধারণ মেয়ের কথা বলা হয়েছে এবং কবিতাগুলিতে রয়েছে দুঃখ-বেদনার প্রতি কবির সহানুভূতির প্রকাশ।

[★কাব্যগ্রন্থের নামকরণ :- কবির জেষ্ঠ্য কন্যা বেলাদেবী এই সময়ে অত্যন্ত পীড়িত হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যু অবধারিত। সেই কন্যার রোগশয্যার পাশে বসে কবির মনে হয়েছিল যে, জগতের সবকিছুই 'পলাতকা'। কাউকেই ধরে রাখা যায় না। এই ভাবনা থেকেই এই কাব্যগ্রন্থের এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।]

১৬) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "শিশু ভোলানাথ" (১৫ই সেপ্টেম্বর, ১৯২২/১৩২৯) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) "শিশু" কাব্যগ্রন্থে আমরা যে বাস্তব জীবনের শিশুর সাক্ষাৎ পেয়েছিলাম, "শিশু ভোলানাথ" কাব্যগ্রন্থে সেই শিশুরই আমরা এক আদর্শরূপ দর্শন করি।

(খ) "শিশু ভোলানাথ" কাব্যগ্রন্থের এই শিশু একমাত্র চিরকালের ক্ষ্যাপা ভোলানাথের সঙ্গেই তুলনীয়।

[★তথ্য :- "শিশু ভোলানাথ" কাব্যগ্রন্থের শিশু Idealised শিশু, তাই সে শিশুর পূর্বোক্ত "শিশু" কাব্যগ্রন্থের সঙ্গে এখানের "শিশু ভোলানাথ" কাব্যগ্রন্থের প্রভেদ রয়েছে।]

১৭) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "পূরবী" (১৯২৫/শ্রাবণ, ১৩৩২) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) "পূরবী" পরিপূর্ণভাবে প্রেম ও সৌন্দর্যবোধের কাব্যগ্রন্থ।

(খ) "পূরবী" কাব্যগ্রন্থটি কবি হৃদয়ের এই প্রেম ও সৌন্দর্যবোধ ব্যথা এবং বেদনার রসে সিক্ত।

(গ) এই কাব্যগ্রন্থের একদিকে বিদায়ের বিষাদময়তা, অন্যদিকে বিদায়ীগামী ভুলে যাওয়া যৌবনের প্রতি মমত্ত্ববোধজনিত আকর্ষণ -- এই দুইয়ের টানাপোড়েনে এই কবি হৃদয় নিপীড়িত ও ক্ষত-বিক্ষত, 'পূরবী'র করুন সুর ও ছন্দে কবি সেই বেদনার বীনাই বাজিয়েছেন।

১৮) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "মহুয়া" (১৯২৯/আশ্বিন, ১৩৩৬) কাব্যগ্রন্থের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য :-

★গুরুত্ব :- (ক) "মহুয়া" কাব্যগ্রন্থের সঙ্গে সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রধান কাব্যধারারও যেন সমাপ্তি ঘটে।

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থে কবি বার্ধক্যে পৌঁছেও যৌবনের উন্মাদনা অনুভব করেছেন।

(খ) এই কাব্যগ্রন্থে কবি প্রতিদিনের প্রেমকে উত্তীর্ণ করে দিয়েছেন বৃহৎ ও মহৎ কর্তব্যের মাঝে।

১৯) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "পুনশ্চ" (১৯৩২/আশ্বিন, ১৩৩৯) কাব্যগ্রন্থের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য :-

★গুরুত্ব :- (ক) "পুনশ্চ" কাব্যগ্রন্থের বিষয়বস্তু এবং আঙ্গিক তথা ছন্দোরীতি পরবর্তী গ্রন্থগুলিতে অনুসৃত হয়েছে।

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) এই কাব্যগ্রন্থে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ছবি ফুটে উঠেছে।

(খ) "পুনশ্চ" কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি গদ্যছন্দে লেখা। কাব্যগ্রন্থের এই গদ্যছন্দের পবর্তনায় ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাব থাকা খুবই সম্ভব এবং সংস্কৃত সাহিত্যের প্রভাব থাকাও অসম্ভব নয়।

(গ) বিষয়বস্তুর দিক থেকে পূর্ববর্তী "পলাতকা" কাব্যগ্রন্থের সঙ্গে "পুনশ্চ" কাব্যগ্রন্থের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

[★বিষয়ের মিল :- "পুনশ্চ" কাব্যগ্রন্থের বিষয়ের সঙ্গে "পুনশ্চ পর্ব (১৯৩০-১৯৩৬)"-এর তিনটি কাব্যগ্রন্থ -- "শেষ সপ্তক", "পত্রপুট" ও "শ্যামলী"-র মিল রয়েছে। আঙ্গিক, রীতি-প্রকরণ, এবং বিষয়বস্তুর দিক থেকে এই পর্বের চারটি গ্রন্থই সমধর্মী -- গদ্যছন্দের মাধ্যমে আমাদের গদ্যে ভরা জীবনযাপনের কিছুটা পরিচয় দানের চেষ্টা করা হয়েছে বিভিন্ন কাহিনির মাধ্যমে। প্রধানত উপরে উল্লিখিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সব কাব্যগ্রন্থই আখ্যানমূলক কাহিনীর প্রাধান্য, তবে এর অন্তর্গত বা অন্তর্ভুক্ত কোন কোন কবিতায় কবি চিত্তের ক্ষণিক আবেগ বা খেয়াল-খুশির লঘু শিথিল মুহূর্তকে ধরে রাখার চেষ্টাও হয়েছে। [এখানে বর্ণিত ৪টি কাব্যগ্রন্থের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য প্রায় সমান। তাই ৪টি কাব্যগ্রন্থের এই বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নে আর আলাদা করে দেওয়া হল না।]

২০) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "প্রান্তিক" (১৯৩৮/পৌষ, ১৩৪৪) কাব্যগ্রন্থের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য :-

★গুরুত্ব :- (ক) এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "অন্ত্য বা শেষ লেখা পর্ব (১৯৩৭-১৯৪১)"-এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ।

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) মৃত্যুর স্পর্শলাভ করে কবি এই কাব্যগ্রন্থে উপলব্ধি করেছেন যে মৃত্যুস্নানেই জীবন শুচি, শুভ্র ও অনন্ত হয়ে ওঠে।

[★তথ্য :- মরণের প্রান্ত থেকে ফিরে এসে কবি রচনা করেন তাঁর "প্রান্তিক" কাব্যগ্রন্থটি।]

২১) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "সেঁজুতি" (১৯৩৮/ভাদ্র, ১৩৪৫) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) অদূরাগত মৃতভাবনা এবং জীবন-সন্ধ্যাকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে "সেঁজুতি" কাব্যগ্রন্থটি।

(খ) সন্ধ্যাবাতির স্নিগ্ধতা ও কোমলতা এই কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলিতে বর্তমান।

(গ) কর্মক্লান্ত দিনের অবসানে জীবন-সন্ধ্যায় কবি ফেলে আসা দিনগুলির কথা সারাদিনের কাজকর্মের হিসেব-নিকেশ করেছেন এই কাব্যগ্রন্থে।

[★তথ্য :- "সেঁজুতি" কথার অর্থ হল "সন্ধ্যাবাতি"।]

২২) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "আকাশ-প্রদীপ" (৪ই মে, ১৯৩৯/বৈশাখ, ১৩৪৬) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) "আকাশ-প্রদীপ" কাব্যগ্রন্থে কবি তাঁর জীবনের স্মৃতিচারণা করেছেন।

২৩) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "নবজাতক" (১৯৪০/বৈশাখ, ১৩৪৭) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) "নবজাতক" মানবতাবোধের কাব্যগ্রন্থ।

(খ) আধুনিক যুগে সভ্যতার নামে যে বীভৎস ধ্বংসলীলা চলছে, কবি মনে-প্রাণে তার উচ্ছেদ কামনা করেন, এবং সেই উচ্ছেদপ্রাপ্ত সৃষ্টির ভস্ম-স্তূপ থেকে এক নতুন সৃষ্টির আবির্ভাবও কামনা করেন কবি এই কাব্যগ্রন্থে।

(গ) এই কাব্যগ্রন্থে বর্তমান সভ্যতার ধ্বংসলীলায় বিক্ষিপ্ত ও বিক্ষুব্ধ মানব-মন নতুন যুগের আলোয় ভরা পৃথিবীতে নতুন মানবশিশুর আগমন আশায় প্রতীক্ষারত রয়েছে।

২৪) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "সানাই" (১৯৪০/আষাঢ়, ১৩৪৭) কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য :-

★বৈশিষ্ট্য :- (ক) "সানাই" কাব্যগ্রন্থে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুরানো মেজাজ আবার ফিরে এসেছে, তাই এতে একাত্মভাবেই পাওয়া যাচ্ছে খাঁটি গীতিকবিতার সুর ও‌ ছন্দ।

(খ) এই কাব্যগ্রন্থের অনেকগুলি কবিতাই বাস্তবের ঊর্ধ্বে রোমান্টিক প্রেমের জগতে কবি অভিযান চালিয়েছেন।

  •  বিশেষ দ্রষ্টব্য :-  আপনারা দেখতে পাচ্ছেন যে, এখানে অনেক জায়গায় মাত্র একটি গুরুত্ব বা একটি বৈশিষ্ট্য দেওয়া হয়েছে। এই নয় যে যে আমার কাছে এসব কাব্যগ্রন্থের গুরুত্ব বা বৈশিষ্ট্য বেশি নেই। আমার কাছে এই কাব্যগ্রন্থগুলির কোনটির ২-৩টা বা কোনটির ৩-৪টি করে বৈশিষ্ট্য তৈরি করা আছে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি বই লেখা হয়েছে, তাই ওনাকে নিয়ে গুগলেও সবচেয়ে বেশি লেখা পোস্ট হয়েছে। এবার আমি যখন কোন না কোন বই থেকে কাব্যগ্রন্থগুলির গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য বানাতে যাচ্ছি তখন আমার ৩০% গুগলের কপিরাইটের আওতায় পড়ছে। যার জন্য এখানে আমি কোনটির ২-৩টি বা কোনটির ৩-৪টি বৈশিষ্ট্য থাকা সত্ত্বেও আমি মাত্র কোথাও ১টি বা কোথাও ২টি বা কোথাও ৩টি বৈশিষ্ট্য দিয়েছি। অর্থাৎ আমি আমার পোস্টের ৩০% কপিরাইট পোস্ট ডিলিট করে দিয়েছি। যদিও আমি গুগল থেকে কোন কপি করিনি, কিন্তু আমি যে বই থেকে কাব্যগ্রন্থগুলির গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য নিয়েছি। সেই বই থেকে আরও অনেকে তথ্য নিয়ে তাদের ব্লগে বা ওয়েবসাইটে পোস্ট করেছে। সর্বোপরি প্রতিটার তবু ১টি গুরুত্ব বা ১টি বৈশিষ্ট্য আমি দিয়েছি। কিন্তু আমার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "বলাকা" কাব্যগ্রন্থের সব গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্যই গুগলের কপিরাইটের আওতায় পড়েছে। সেজন্য এখানে "বলাকা" কাব্যগ্রন্থসহ অনেক কাব্যগ্রন্থেরই গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য আমি কপিরাইটের জন্য বাদ দিয়ে একদম ফ্রেশ করে অর্থাৎ ১০০% ইউনিক তথ্য বা পয়েন্ট দিয়ে আমি আমার ব্লগে পোস্ট করলাম।


  • আলোচক : সৌম্য মাইতি
  • যোগাযোগ : ৬২৯০৩৭৭১৩৪
  • S.L.S.T  বাংলা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে চাইলে ফোন করে যোগাযোগ করুন আমার ৬২৯০৩৭৭১৩৪ নম্বরে, অথবা আমার WhatssApp-তে ম্যাসেজ করুন ৮৭৬৮৮৩০২৩০ নম্বরে। এখানে উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর মতো সঠিক তথ্যসহকারে ১ নম্বরের পাশাপাশি ২ নম্বরের ডেসক্রিপটিভ প্রশ্নোত্তরও করানো হয়। ধন্যবাদ।

This is a premium content, you can continue reading this content in our Android App. Click the button below to continue. alert-info

2 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post