NEW :
Loading contents...

মধ্যযুগ থেকে কয়েকটি ডেসক্রিপটিভ প্রশ্নোত্তর

১) চণ্ডীদাসের নামে কোন্ প্রেমকাহিনি প্রচলিত আছে?

★উত্তর - বাঙালি মন্দিরের পুরোহিত চণ্ডীদাস রামী নামের এক রজকিনীর প্রেমে মুগ্ধ হন। তিনি রামীর মধ্যে রাধারূপ দেখেন। জমিদার এই প্রণয় সম্পর্ককে অবৈধ আখ্যা দিয়ে চণ্ডীদাসকে সমাজচ্যুত ও মন্দির থেকে বিতাড়িত করেন।

২) বাংলায় বৈষ্ণবধর্ম কীভাবে প্রচারিত হয়েছিল?

★উত্তর - ভাগবতধর্ম বা প্রাচীন বৈষ্ণবধর্ম মধ্যযুগীয় বাংলায় প্রবেশ করে। নদিয়ার নবদ্বীপ-শান্তিপুর অঞ্চলে অদ্বৈতাদি পণ্ডিতগণ গোপনে এই ধর্মাচরণ করতেন। পরে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব এই ধর্মের নতুন তাৎপর্য দিয়ে তা সারা দেশে প্রচার করেন।

৩) 'পূর্বরাগ' কাকে বলে? পূর্বরাগের শ্রেষ্ঠ পদকর্তা কে?

★উত্তর - রূপ গোস্বামী তাঁর "উজ্জ্বলনীলমণি" গ্রন্থে 'পূর্বরাগ'-এর সংজ্ঞার্থে বলেছেন, --- "মিলনের পূর্বে দর্শন, নাম শ্রবণ প্রভৃতি দ্বারা নায়ক-নায়িকার মনে পরস্পরের প্রতি যে অনুরাগ জন্মে, তাকে বলে পূর্বরাগ।" পূর্বরাগের শ্রেষ্ঠ পদকর্তা হলেন চণ্ডীদাস।

৪) 'মাথুর' কাকে বলে?

★উত্তর - 'মাথুর' শব্দটি এসেছে 'মথুরা' শব্দ থেকে। 'মাথুর' পদাবলি চির বিরহের আর্তিমূলক পদাবলি। কংসাসুর বধের জন্য শ্রীকৃষ্ণ তাঁর প্রিয় লীলাভূমি বৃন্দাবন ত্যাগ করে মথুরায় চলে গেলেন। রাধার সঙ্গে তাঁর আর দেখা হয় না। কৃষ্ণকে হারিয়ে রাধা বেদনার করুণ ক্রন্দনে ভেঙে পড়েছেন, এ বিষয় নিয়ে রচিত হয় মাথুর পদাবলি।

৫) বৈষ্ণব পদাবলিতে 'ভণিতা' কাকে বলে?

★উত্তর - প্রাচীন কাব্যে কবিতার শেষে কবির নিজের নাম যোজনা করে আত্মপরিচয় দিতেন। বৈষ্ণব পদাবলিতে এই রীতি অনুসৃত। বৈষ্ণব পদাবলিতে কবি পদের শেষে নিজের নামের উল্লেখ করে যে পরিচয় দেন, তাকেই বলা হয় 'ভণিতা'। ভণিতার সাহায্যে পদাবলির কবিকে চিনে নেওয়া যায় এবং তাঁর বৈশিষ্ট্য অনুভব করা যায়।

৬) 'সহজিয়া বৈষ্ণব দর্শন' কাকে বলে?

★উত্তর - 'সহজিয়া বৈষ্ণব দর্শন' একটি দার্শনিক মতবাদ যা সহজিয়া বৌদ্ধদর্শন থেকে জাত। সহজিয়া পন্থিগণ গুরু ও সাধনসঙ্গিনীকে রাধাকৃষ্ণ রূপে উপাসনা করেন। অনেকে বলেন -- গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের মধ্যে বিকৃতি ঘটাবার ফলে সহজিয়া বৈষ্ণব দর্শনের উদ্ভব হয়েছিল।

৭) 'কবীন্দ্র' কার উপাধি? তাঁর 'পরাগলী মহাভারত'-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য কী?

★উত্তর - বাংলা ভাষায় প্রথম মহাভারতের অনুবাদক পরমেশ্বর দাসের উপাধি ছিল 'কবীন্দ্র'। তাঁর 'পরাগলী মহাভারত'-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল -- মুসলমান শাসকের পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত হলেও কবীন্দ্র পরমেশ্বর দাসের রচনায় ইসলামি শব্দ একেবারেই নেই বললেই চলে। তিনি কাব্যরচনার মূল লক্ষ্য থেকে চুল পরিমাণও বিচ্যুত হন নি।

৮) মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কে ছিলেন? তাঁর অসম্পূর্ণ রচনা কারা সমাপ্ত করেন?

★উত্তর - মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক ছিলেন কবি কাশীরাম দাস। কথিত আছে যে, কবির অসমাপ্ত কাব্য সমাপ্ত করেন কবির পুত্র, ভ্রাতুষ্পুত্র ও শিষ্য স্থানীয় অনেকেই। ভ্রাতুষ্পুত্র নন্দরাম দাস রচনা করেন দ্রোণপর্ব; শল্যপর্ব ও নারীপর্ব মঙ্গলকাব্যের বিশিষ্ট কবি কৃষ্ণরাম দাসের রচনা এবং অশ্বমেধ পর্ব রচনা করেন কবি দ্বিজ রঘুনাথ দাস। অন্যান্য পর্বের ভণিতায় জনৈক কবি নিত্যানন্দ ঘোষ, গঙ্গাদাস সেন,  গদাধর দাস, রাজেন্দ্র দাস ও গোপীনাথ দত্তের নাম পাওয়া যায়।

৯) 'মৈমনসিংহ গীতিকা' বা 'ময়মনসিংহ গীতিকা' কী?

★উত্তর - 'মৈমনসিংহ গীতিকা' বা 'ময়মনসিংহ গীতিকা' হল পূর্ব ময়মনসিংহ অঞ্চল বলে পরিচিত, বর্তমানে বাংলাদেশের নেত্রকোণা জেলার সুসং (সুয্গ) দুর্গাপুর উপজেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় লোকমুখে প্রচারিত ও প্রচলিত কবিতা বা গীতিসমূহের সংকলন। অবশ্য এই গীতের কোন কোনটির কাহিনি পার্শ্ববর্তী (বর্তমান হবিগঞ্জ জেলা) বানিয়াচং কেন্দ্রিক। উল্লেখ্য, এই বানিয়াচং হল বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গ্রাম।

১০) ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের কাব্যখ্যাতি কবে থেকে আরম্ভ হয়?

★উত্তর - বর্ধমানের রাজা কর্তৃক ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের পিতা হুগলির জমিদারি পদ থেকে বিচ্যুত হলে ভারতচন্দ্র এর কারণ জানতে ও প্রতিকার করতে রাজদরবারে গমন করেন। এর আগেই, ভারতচন্দ্রের বয়স যখন মাত্র পনের বছর, তখন তাঁর কাব্য "সত্যনারায়ণের পাঁচালী" (১৭২৭ খ্রিস্টাব্দ) রচনা শেষ হয় এবং এই কাব্য রচনার পর পাঠকমহল থেকে তিনি ব্যাপক সাড়া পান।


  • আলোচক : সৌম্য মাইতি
  • যোগাযোগ : ৬২৯০৩৭৭১৩৪
  • S.L.S.T  বাংলা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে চাইলে ফোন করে যোগাযোগ করুন আমার ৬২৯০৩৭৭১৩৪ নম্বরে, অথবা আমার WhatssApp-তে ম্যাসেজ করুন ৮৭৬৮৮৩০২৩০ নম্বরে। এখানে উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর মতো সঠিক তথ্যসহকারে ১ নম্বরের পাশাপাশি ২ নম্বরের ডেসক্রিপটিভ প্রশ্নোত্তরও করানো হয়। ধন্যবাদ।

This is a premium content, you can continue reading this content in our Android App. Click the button below to continue. alert-info

Post a Comment

Previous Post Next Post