NEW :
Loading contents...

   জীবনানন্দ দাশের উপাধি বা আখ্যা   

১) ''চিত্ররূপময় কবি''

★তথ্য :- কবি জীবনানন্দ দাশের "ধূসর পাণ্ডুলিপি" (১৯৩৬/১৩৪৩) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ''মৃত্যুর আগে'' কবিতাটি পাঠ করে আশ্বিন, ১৩৪২ বঙ্গাব্দে কবি-সাহিত্যিক ও সমালোচক বুদ্ধদেব বসুকে লেখা একটি চিঠির মাধ্যমে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জানিয়েছেন, --- "জীবনানন্দ দাশের 'চিত্ররূপময়' কবিতাটি আমাকে আনন্দ দিয়েছে।" এছাড়া, সাহিত্য-সমালোক বুদ্ধদেব বসু জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ প্রসঙ্গে বলেছেন, - "তার কাব্য বর্ণনাবহুল, তার বর্ণনা চিত্রবহুল এবং তার চিত্র বর্ণবহুল।"

★এর কারণ :- জীবনানন্দ দাশের কবিতা পড়তে পড়তে ইমপ্রেশনিস্টদের ছবির কথাই মনে হয়। এই ছবিগুলোর খণ্ডাংশের কোন অর্থ হয় না, সব মিলিয়ে একটা সামগ্রিক আবেদন (Total Effect) সৃষ্টি করাই এর লক্ষ্য। ইমপ্রেশনিস্টদের মতো কখনো তাঁর চোখে ভোরের আলো সবুজ হয়ে দেখা দিয়েছে, কখনো বা নীল হয়ে। "বনলতা সেন" কাব্যগ্রন্থের 'ঘাস', 'শিকার' বা "ধূসর পাণ্ডুলিপি" কাব্যগ্রন্থের 'অবসরের গান' কবিতা পড়লেই তা বোঝা যায়। জীবনানন্দ দাশ প্রেম, হতাশা, স্মৃতি, প্রেরণা, জীবন, মৃত্যু প্রভৃতি ভাবনা ও অনুভূতিকে আলোর মাধ্যমে দেখেছেন 'সুরঞ্জনা' ও 'সুদর্শনা' কবিতায়। এছাড়া তাঁর ইতিহাস চেতনা এবং সমাজচেতনাও অনেক ক্ষেত্রে আলোর প্রতীকে প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর 'হাজার হাজার শুধু খেলা করে' বা 'সবিতা' কবিতায় এসব চিত্ররূপময়তা সুস্পষ্ট। এ সমস্ত কারণে জীবনানন্দ দাশকে "চিত্ররূপময় কবি" বলা হয়।

২) ''ধূসরতার কবি''

★এর কারণ :- মৃত্যুচেতনা কবির ভাবনার জগতে কতটা প্রবল তা জীবনানন্দ দাশের "ধূসর পাণ্ডুলিপি" (১৯৩৬/১৩৪৩) কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি পাঠের মাধ্যমে উপলব্ধি করা যায়। এছাড়া, এই কাব্যগ্রন্থের শেষের দিকের কবিতাগুলিতে কবির ইতিহাস চেতনা স্থান পেয়েছে। এই কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি পাঠকমহলের কাছে ধূসরতর হয়ে বেঁচে আছে। ঝরা পাতা, শিরশিরে শীতল হাওয়া, ব্যাবিলনীয় ও মিশরীয় সভ্যতা, কবির সহজাত কাব্য বৈশিষ্ট্য এবং বন্ধ্যাযুগের চিত্রকল্প অঙ্কনের ক্ষেত্রে কবি জীবনানন্দের তুলনা কবি নিজেই। একারণেই হয়ত অনেক সাহিত্য-সমালোচক জীবনানন্দ দাশকে "ধূসরতার কবি" হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন।

৩) ''তিমির হননের কবি''

৪) ''নির্জনতার কবি'' বা "নির্জনতম কবি"

★তথ্য :- জীবনানন্দ দাশকে ''নির্জনতার কবি'' বা "নির্জনতম কবি" বলে অভিহিত করেছেন কবি-সাহিত্যিক ও সমালোচক বুদ্ধদেব বসু। কিন্তু কবি-সাহিত্যিক ও সমালোচক আলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত তাঁর এই অভিধাটি খারিজ করে দিয়েছিলেন।

৫) ''রূপসী বাংলার কবি''

★এর কারণ :- জীবনানন্দ দাশের কবিতাগুলিতে মূলত গ্রাম বাংলার প্রকৃতির রূপ-রস-বৈচিত্র্য বা সৌন্দর্য চেতনা স্থান পেয়েছে। বাংলার প্রকৃতির নিবিড় বর্ণনার মাধ্যমে সবার নিকট প্রকৃতিকে তিনি তুলে ধরেছেন। তাঁর কবিতাগুলিতে আবহমান বাংলার চিরায়ত উৎসব ও চিত্ররূপ সৌন্দর্য প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর "রূপসী বাংলা" (১৯৫৭) কাব্যগ্রন্থ এদিক থেকে অনন্য। এই কাব্যগ্রন্থে কবির ভাবনার উল্লিখিত প্রায় ৭০টি ফুল-ফল-বৃক্ষ ও লতা-গুল্মোর একটি সচিত্র রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে এবং এতে সংশ্লিষ্ট উদ্ধৃতি স্থান পেয়েছে। একটিমাত্র কাব্যগ্রন্থে বিশাল উদ্ভিদজগতের এমন বিস্তার রীতিমতো বিস্ময়কর। এখানে একই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অধিকাংশ পুষ্প-বৃক্ষের সমনাম এবং বৈজ্ঞানিক নামগুলি। অতি ক্ষুদ্র একটি বুনোফুল থেকে শুরু করে সুবিশাল বট-অশ্বত্থও কবির দৃষ্টি এড়ায়নি। এ সমস্ত কারণে জীবনানন্দ দাশকে "রূপসী বাংলার কবি" উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

৬) ''প্রকৃতির কবি''

★এর কারণ :- জীবনানন্দ দাশ গতানুগতিক কাব্যপ্রবাহে ব্যতিক্রমী ধারার সৃষ্টি করেছেন। প্রকৃতি মগ্নতা তাঁর কবিতার প্রধান বৈশিষ্ট্য। গ্রাম বাংলার প্রকৃতি তাঁর কবিতায় অত্যন্ত আকর্ষণীয় রূপে বিধৃত হয়েছে। তাঁর কবিতায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যময় প্রকৃতি কাব্যময় হয়ে উঠেছে। প্রকৃতির নৈসর্গিক বর্ণনা ও প্রকৃতিপ্রেম তাঁর কবিতায় পরিপূর্ণতা পেয়েছে। অর্থাৎ তিনি প্রকৃতির বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, পশুপাখি, নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর পাড়, শিশুদের খেলার মাঠ, সবুজ ধানের ক্ষেত, চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্রকে তাঁর কবিতা তথা কাব্যগ্রন্থে স্থান দিয়েছেন। তাঁর "রূপসী বাংলা" (১৯৫৭) কাব্যগ্রন্থ এদিক থেকে অনন্য। তিনি তৎকালীন বিক্ষোভ ও আলোড়ন থেকে নিজেকে সন্তর্পণে সরিয়ে রেখে গ্রামীণ প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্যের মধ্যে নিজেকে বিলীন করেছিলেন। এ সমস্ত কারণে জীবনানন্দ দাশকে ''প্রকৃতির কবি'' উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

৭) ''বিপন্ন মানবতার নীলকণ্ঠ কবি''

৮) "বিপন্ন বিস্ময়ের কবি"

৯) "সুররিয়ালিস্ট কবি" বা "পরাবাস্তববাদী কবি"

★তথ্য :- ড. দিপ্তী ত্রিপাঠী তাঁর "আধুনিক বাংলা কাব্য পরিচয়" জীবনানন্দ দাশকে বাংলা কাব্য সাহিত্যে 'সুররিয়ালিস্ট'  বা 'পরাবাস্তববাদী' কবিতার প্রবর্তক বলে উল্লেখ করেছেন।

★এর কারণ :- জীবনানন্দ দাশ তাঁর কবিতায় বাস্তব জীবনের গভীর অনুভূতিকে তুলে ধরেছেন এবং তাকে ব্যাখা করেছেন কঠিন বাস্তবতার আলোকেই, যেখানে যুক্তি-তর্ক, বিধি নিয়মকে না মেনে, অবচেতন মনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, বাস্তবের বহু উর্ধ্বে যার অবস্থান, কল্পনার স্বপ্ন যার গায়ে জড়িয়ে আছে, সেই Super reality তথা পরাবাস্তবতার চিত্রই অঙ্কন করেছেন। এ সমস্ত কারণে জীবনানন্দ দাশকে "সুররিয়ালিস্ট কবি" বা "পরাবাস্তববাদী কবি" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

১০) ''শুদ্ধতম কবি''

★তথ্য :- জীবনানন্দ দাশকে বাংলা ভাষার ''শুদ্ধতম কবি'' বলে অভিহিত করেছেন কবি-সাহাত্যিক অন্নদাশঙ্কর রায় ও কবি-সাহিত্যিক আবদুল মান্নান সৈয়দ।

১১) "মৃত্যুচেতনার কবি"

১২) "ইতিহাস চেতনার কবি"

১৩) "সময়চেতনার কবি"

১৮) "কালচেতনার কবি"

১৫) "জীবন বোধের কবি"


  • আলোচক : সৌম্য মাইতি
  • যোগাযোগ : ৬২৯০৩৭৭১৩৪

This is a premium content, you can continue reading this content in our Android App. Click the button below to continue. alert-info

5 Comments

  1. Khub sundor...apni ki ssc er jonno guide koren ?

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ। ধন্যবাদ আপনাকে।

      Delete
  2. স্যার , আপনার প্রতিটি post ই অসাধারণ 🙏🙏🙏🙏 thank you so much স্যার

    ReplyDelete

Post a Comment

Previous Post Next Post